ময়নাতদন্ত শেষে এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলের মরদেহ হস্তান্তর

বরিশালের মুলাদী উপজেলার জয়ন্তী নদী থেকে উদ্ধার প্রয়াত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলে এটিএম খালেকুজ্জামান কুশলের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে তার ভগ্নিপতি একিউএম জিয়াউল হক জুয়েল মরদেহ বুঝে নেন। পরে মরদেহ নিয়ে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় কুশলের ছোট ভগ্নিপতিও সঙ্গে ছিলেন।

একিউএম জিয়াউল হক জুয়েল জানান, জুরাইনে বাবা এটিএম শামসুজ্জামানের কবরের পাশে কুশলকে দাফন করা হবে।

তিনি জানান, আপাতত কোনো অভিযোগ নেই। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, প্রতিবেদনে যদি হত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আইনের শরণাপন্ন হব।

 

জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, পরিবারের কারও সঙ্গে কুশলের তেমন কথাবার্তা হতো না। তবে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। ২০ বা ২১ অক্টোবর সকালে মায়ের সঙ্গেই কথা বলে বাসা থেকে বের হন কুশল। তখন সে জানিয়েছিল, তার নতুন একটি চাকুরি হয়েছে। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। সর্বশেষ ৩০ অক্টোবর পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন কুশলের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে কুশলের মৃত্যু নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি জানিয়ে পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ’খুলনায় চাকরিতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হওয়া কুশলের মরদেহ কীভাবে বরিশালে এলো, সেটি নিয়ে পরিবারের সদস্যরাও দ্বিধায় রয়েছে। তবে তারা এখনও কোনো হত্যা মামলা বা লিখিত অভিযোগ করেনি। পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করে মরদেহ ময়নাতদন্ত করেছে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ’এটিএম খালেকুজ্জামান কুশল প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলে হওয়ায় তার মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তার সর্বশেষ অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। সেখানে কোনো ধরনের আপত্তিকর কিছু উদঘাটিত হলে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে অবশ্যই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি বলেন, ’ঢাকার আশপাশের কোথাও মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহটি ভাসতে ভাসতে বরিশালে এসেছে হয়তো।’

মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেফায়েতুল ইসলাম বলেন, ’অর্ধগলিত থাকায় মরদেহের শরীরের তেমন কোথায় আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করা যায়নি। তবে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কোনো অসংগতি থাকলে রিপোর্টে উঠে আসবে।’

জয়ন্তী নদীর নাজিরপুর ইউনিয়নের নাসিরহাট নিজাম তালুকদারের বাড়িসংলগ্ন এলাকায় মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা বিষয়টি নৌ-পুলিশকে জানায়। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মুলাদী থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

২০১২ সালে বড় ভাই কামরুজ্জামান কবীরকে হত্যা মামলায় ২০১৪ সালে খলিকুজ্জামান কুশলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সম্প্রতি সাজা মওকুফ হওয়ায় তিনি জেল থেকে ছাড়া পান।

আরও পড়ুন