নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি সিনিয়র চরিত্রে এসেও তিনি আলো ছড়িয়েছেন সমানভাবে। অভিনয় নৈপুণ্যে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তার সাবলীল অভিনয়, ভরাট কণ্ঠের সংলাপ দর্শকদের হৃদয়ে নিখাদ মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়। তিনি প্রবীর মিত্র। বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা।
কয়েক বছর ধরে ভালো নেই এই বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র অভিনেতা। দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন এক সময়ের পর্দা কাঁপানো প্রবীর মিত্র। বাংলা সিনেমার মুকুটহীন এই নবাব আগের মতো আর হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার দিন কাটছে ঘরে হুইলচেয়ারে বসে কিংবা বিছানায় শুয়ে। নানা অসুখে তিনি ধরাশায়ী। কয়েক বছর ধরে হাঁটুর সমস্যায় পড়েছেন তিনি।
এদিকে, হঠাৎ করেই সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে স্ব-পরিবারে প্রবীর মিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তবে এমন খবর সত্য নয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার ছেলে মিথুন মিত্র। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন খবর। এমনটা হলে আমরাই সবাইকে জানাতাম। কেউ গুজবে কান দিবেন না।
এর আগে কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অভিনেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন মিথুন জানান, বাবার মৃত্যুর খবরটি ভুয়া। এ ধরনের গুজবে আমরা বেশ বিব্রত ও বিরক্ত। সবার কাছে অনুরোধ কেউ গুজব ছড়াবেন না।
থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে সংস্কৃতির ভুবনে আসেন প্রবীর মিত্র। ‘লালকুটি’ থিয়েটারে কাজ করেছেন অনেক দিন। এরপর পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। প্রবীর মিত্রের প্রথম সিনেমার নাম ‘জলছবি’।
ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় তিনি ছিলেন নায়ক। এ ছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমাতেও তিনি ছিলেন মূখ্য চরিত্রে। এরপর ধীরে ধীরে প্রবীর মিত্র মনোযোগী হন চরিত্রভিত্তিক অভিনয়ে।
নান্দনিক অভিনয়ের জন্য বরাবরই প্রশংসিত প্রবীর মিত্র। কিন্তু দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার পুরস্কার ভাগ্য প্রসন্ন নয়। কেবল ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত তিনি। এখন ঘরবন্দিই কাটছে তার দিন-রাত।