লক্ষ্মীপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ, ৬দিনেও হদিস মিলেনি,

প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঘরে ডুকে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের ৬দিনেও হদিস মিলেনি। এ ঘটনায় ১০জনকে আসামী করে থানায় মামলা হলেও প্রধান অভিযুক্তসহ এখনো ধরাছোয়ার বাইরে ৮ আসামী। মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশসহ নানা হুমকি-ধুমকি দিচ্ছে আসামীরা। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অপহৃত স্কুল ছাত্রীর পরিবার।প্রধান অভিযুক্ত রাসেল হোসেন অপুসহ আসামীদের গ্রেফতার ও স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারের দাবী জানান স্থানীয়রা।
তবে পুলিশ বলছে, অপহরণের ঘটনার সত্যতা মিলেছে। এঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে ও অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারের অভিযান চলছে।

স্বজন ও এলাকাবাসী জানায় দেড়মাস আগে স্কুলের ৮ম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পাচঁপাড়া এলাকায় নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে ওই ছাত্রী। গত ২৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় নৌকা মার্কার নির্বাচনী শ্লোগান দিয়ে ২০/২৫ জনের একদল যুবক মুখোশ পরে ছাত্রীর নানান বাড়িতে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে রাসেল হোসেন অপুর নেতৃত্বে ৮/১০জনের একদল ঘরে ডুকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে ছাত্রীর মা ও ভাইসহ অন্যদের অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে অপহরন করে নিয়ে যায়।
এসময় তাদের বাধা দিলে অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনার পরের দিন ছাত্রীর মা বিবি ফাতেমা বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় ১০জনকে আসামী করে অপহরন,নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামী করা হয় রাসেল হোসেন অপুকে। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই মামলায় এজাহারভূক্ত আসামী আনোয়ার হোসেন ও রুবেল পাটওয়ারীকে গ্রেফতার করে।

এখনোও ধরা ছোয়ার বাইরে প্রধান আসামীসহ অন্যরা। ঘটনার পর থেকে মামলা তুলে নিতে বাদিকে প্রাণনাশসহ নানা ধরনের ভয়ভীতির চাপ দিয়ে বেড়াচ্ছে আসামীরা।

ফলে নিরাপত্তায়হীনতায় ভুগছেন অপহৃত স্কুল ছাত্রীর পরিবার। ঢাকার রায়ের বাগ হাজী শরীয়ত উল্যাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিল অপহৃত ছাত্রী।

ছাত্রীর মা জানান, নৌকা মার্কার স্লোগান দিয়ে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে করে মেয়েকে অপহরন করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এঘটনার ৫ দিন পার হলেও এখনো ধরাছোয়ার বাইরে প্রধান আসামীসহ অন্যরা। মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আসামীরা। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জড়িতদের গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধারের দাবী জানান ছাত্রীর মা।

স্থানীয়রা জানায়, এইভাবে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফিল্ম স্টাইলে শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গেলেও আসামীদের এখনো ধরতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। এটি কোনভাবে মেনে নেয়ার মতো নয়। এতে করে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে স্থানীয়রা। জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানান অপহৃত স্কুল ছাত্রীর স্বজন ও এলাকাবাসী। তবে প্রধান অভিযুক্ত রাসেল হোসেন অপুর বিরুদ্ধে অপহরন ও ছুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস করেনি। তাই দিনদিনই বেপোয়ারা হয়ে উঠেছে রাসেল হোসেন অপু।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, অপহরণের ঘটনার সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত রাসেল হোসেন অপুসহ অন্য আসামীদের ধরতে ও অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারের অভিযান চলছে। শীঘ্রই প্রধান আসামীসহ অন্যরা ধরা পড়বেই। পাশাপাশি অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন