লক্ষ্মীপুর শহরের সরকারি জমিতে থাকা একটি দোকানঘর রাতের আঁধারে জোরপূর্বক দখলে নেয় ‘অঙ্গশোভা’ নামক একটি পোশাক দোকানের মালিক। ১৬ দিন পর সেটি উপজেলা প্রশাসন অবৈধ দখলদারের কবল থেকে উদ্ধার করে।সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাসের নেতৃত্বে দোকানঘরটি উদ্ধার করা হয়।জমিটি একজন লীজগ্রহীতার কাছে ছিল, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই দোকানঘরটি তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে আবদুল বাতেন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি সরকারের কাছ থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের চকবাজারে আধা শতাংশ জমি লীজ নেয়। সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করে প্রথমে টিনের ব্যবসা পরে কাপড়ের ব্যবসা করা হয়৷ লীজের ওই জমিতে ‘আল মামুন পোশাক বিতান’ নামীন একটি কাপড়ের দোকান ছিল। আবদুর রব নামের এক ব্যবয়াসী দোকানের ভাড়াটিয়া ছিলেন। তাকে হটিয়ে সম্প্রতি দোকানঘরটি দখল করে সেলিম ভূঁইয়া নামে ‘অঙ্গশোভা’ প্রতিষ্ঠানের মালিক।
লীজগ্রহীতা আবদুল বাতেন ভূঁইয়ার ছেলে মোরশেদ আলম জানান, সম্প্রতি তারা দোকানঘর সংস্কারের উদ্যোগ নেন। তাদের দোকানঘরটির পাশের ‘অঙ্গশোভা’ নামক আরেকটি দোকানের মালিক সেলিম ভূঁইয়া ও তার ছেলেরা গত ২২ জুন রাতের আঁধারে তাদের দোকানঘরটি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। তাদের দোকানের পূর্বের নাম মুচে দিয়ে ‘অঙ্গশোভা’ নাম লিখে দেওয়া হয়। সরকারি মালিকানা জমি হওয়ায় বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে জানান।
অন্যদিকে অঙ্গশোভার মালিকপক্ষও জমিটি তাদের মালিকানাধীন দাবি করে। পরে অঙ্গশোভার পক্ষ থেকেও বির্তকিত জমিটি পরিমাপ করার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আবেদন করেন।
সোমবার (৮ জুলাই) জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাসের নেতৃত্বে সার্ভেয়াররা জমিটি পরিমাপ করে। এসময় দখলকৃত দোকানঘর ছাড়াও অঙ্গশোভা মালিকের ভবনের নীচেও সরকারি জমি পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, অঙ্গশোভার মালিকের পক্ষ থেকে ডিসি স্যারের কাছে পরিমাপ করার জন্য আবেদন করে। তারা বলেছে- এ জমি যদি সরকার পায় তাহলে তারা ছেড়ে দিবে। এসিল্যান্ড এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সার্ভেয়াররা জমিটি পরিমাপ করে দেখেছে। অঙ্গশোভা যে জমি দখল করে নিয়েছে, সেটি সরকারি জমি। এছাড়া অঙ্গশোভার ভবনের নীচেও সরকারি জমি রয়েছে। ১৯৮৯ সালে জমিটি সরকার লীজ দেয়। লীজগ্রহীতাকে হটিয়ে অঙ্গশোভার মালিকপক্ষ দোকানঘর দখল করে নিয়েছে। আমরা অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে জমিটি উদ্ধার করেছি। তাদের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লীজগ্রহীতার কাছে জায়গাটি হস্তান্তর করা হবে।
দখলদার অঙ্গশোভার মালিক সেলিমের ছেলে জিহাদ হোসেন বলেন, আমরা ডিসি অফিসে পরিমাপ করার জন্য আবেদন জানিয়েছি- এখানে সরকারি জমি আছে কিনা। আগেও বেশ কয়েকবার পরিমাপ করা হয়েছে, এখানে সরকারি জমি ছিল না। কিন্তু এখন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আমাদেরকে এখান থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমরা আদালতের দারস্থ হবো।