রামগতিতে যানবাহন স্ট্যান্ড ও সব ঘাট চাঁদামুক্ত ঘোষণা বিএনপির

রামগতি প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ১টি লঞ্চঘাট, ৪টি খেয়াঘাট, ৬টি সিএনজি-অটো রিকসা স্ট্যান্ডসহ সব ধরনের স্ট্যান্ডকে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে চাঁদামুক্ত ঘোষণা করছে বিএনপি। ইজারা সংক্রান্ত সব রাজস্ব নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পরিশোধ করে জনগনের জন্য উন্মুক্তের এ ঘোষণা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।
উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকর হবে ৪সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকে। গত ৬আগস্ট থেকে উপজেলায় সবধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জনসাধারণ যেন কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হন তাই ঘোষণাটি জনস্বার্থে মাইকিংসহ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। উপজেলার আলেকজান্ডার বহদ্দারহাট লঞ্চঘাট, খেয়াঘাট, গজারিয়া ঘাট, গাবতলী ঘাট, আবদুল্লাহ ঘাটসহ সকল সিএনজি স্টেশন এবং অটো রিকসা স্ট্যান্ডের সব ধরনের চাঁদা উত্তোলনও বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় দলটির পক্ষ থেকে। এসব ঘাটের রাজস্ব (টোল) ১৭লক্ষ টাকা সাবেক এ সাংসদ নিজ তহবিল থেকে পরিশোধ করে স্বল্পমূল্যে ভাড়াও নির্ধারণ করে দেন। এখন থেকে যাত্রীরা শুধুমাত্র নৌকা-লঞ্চ ভাড়াটা পরিশোধ করে যাতায়াত করতে পারেন। কেন অতিরিক্ত কোন টাকা দিতে হবেনা।
এর আগে উপজেলার বহদ্দারহাট লঞ্চঘাট থেকে ভোলার দৌলতখানের ভাড়া ৫০০টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০টাকা, গজারিয়া ঘাটের ভাড়া ২০০টাকা থেকে কমিয়ে ৮০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও গাবতলী ঘাটের ভাড়া ২৫০ থেকে ১০০টাকা, চর আবদুল্লাহ ঘাটের ভাড়া ৮০টাকা থেকে ৩০টাকা নির্ধারণ করা হয়। এসব ঘাট থেকে দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ভাড়ায় ভোলা, মনপুরা দৌলতখান, কাটাখালী, মির্জাকালু, চর জহির উদ্দিন, চর মোজাম্মেল ও কলাতলিতে যাত্রী পারাপার হতো। এছাড়াও সিএনজি ও অটোরিকসা স্টেশনে নিয়োজিত লাইনম্যান কর্মীদের বেতন ভাতা প্রতি মাসে ৮হাজার টাকা করে সাবেক এ সাংসদ বহন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন থেকে এসব স্টেশন গুলোতে আর জিপি নেওয়া যাবেনা। উপজেলার সকল সিএনজি স্ট্যান্ড ও ঘাটগুলো থেকে চাঁদা (জিপি) আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষুদ্র যানবাহন চালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে।
আলেকজান্ডার বাজার স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক- সালাউদ্দিন, মো: খায়ের জানান, আ.লীগ সরকারের পতনের পর দিন থেকে কোন ধরনের চাঁদা (জিপি) দিতে হচ্ছে না। এখন শান্তিতেই গাড়ি চালাতে পারছি। বহদ্দারহাট লঞ্চঘাট এবং চর আবদুল্যাহ খেয়াঘাট সংলগ্ন ব্যবসায়ী ও বসবাসকারী স্থানীয় কয়েকজন জানান, ঘাটগুলো চাঁদামুক্ত ঘোষণা করে হ্রাসকৃত ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে এসব রুটের যাত্রীরা নানান হয়রানি থেকে দীর্ঘদিন পর মুক্তি পেল। আলেকজান্ডার-সোনাপুর সড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরীন রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীরা এসব রুটে বাস চালু এবং সিএনজি ভাড়াও পুন: নির্ধারণের দাবি জানান।
উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব সিরাজ উদ্দিন জানান, ঘোষিত ভাড়া ও চাঁদাবাজ মুক্ত রাখতে প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের টিম তদারকির কাজ করছে। যে কোন মূল্যে রামগতিকে অপরাধমুক্ত করা হবে। সাবেক সাংসদ এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, ছাত্ররা আন্দোলন করেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তাদের আন্দোলনের ফসল আজকের বাংলাদেশ। তাই মানুষের কষ্ট হয় এমন কোন কাজ করা যাবেনা। আমার নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে আমার নির্বাচনী এলাকা রামগতি-কমলনগরে কোন ধরনের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল বাণিজ্য করতে দেব না। মানুষ স্বস্তিতে থাকবে, ব্যবসা বাণিজ্য করবে, স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধ করে সুখী সমৃদ্ধ রামগতি-কমলনগর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করব।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্ট্যান্ড ও ঘাটসমূহে রাজস্ব পরিশোধ করে ভাড়া পুনঃনির্ধারনের বিষয়টি অবগত হয়েছি। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন কাগজপত্র হাতে পাইনি।

আরও পড়ুন