প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর জেলার সদরসহ পাঁচ উপজেলায় চলমান বন্যায় ১ হাজার ৪৭৬ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, কৃষি, মৎস্য খাত ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানা যায়, জেলার রায়পুরসহ ৫টি উপজেলায় বসবাসরত ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬২ জন মানুষের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যায় ২৮ হাজর ৬১৫টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১৯৯ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।পানিতে ডুবে ২ হাজার ৭৪৬ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা নষ্ট হয়েছে। ফলে ৩০১ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ১৯৬টি ব্রিজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে কৃষি বিভাগের ৫৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ৬৩৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য বিভাগের ৩৭ হাজার ৭৬টি পুকুর ও জলাশয় ভেসে গেছে। এতে ২৩৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে মৎস্য চাষিদের। এছাড়া প্রাণিসম্পদের ৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।অন্যদিকে ১৩৪টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয় ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
১৩২ হেক্টর বনাঞ্চলের বনায়নে ৪৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকার। ১৩.৮৭ কিলোমিটার নদীতীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ২৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে পানিতে ডুবে ১২ হাজার ৯৮৪টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ২৯ হাজার ৩৭০টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ২৯ কোটি ২১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।তিনটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৪০টি নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া মা হ্যাচারিতে ১ হাজার ৩৭০ হেক্টরে ২১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১ হাজার ৪৭৬ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয় জানায় জেলা প্রশাসন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুষমভাবে বণ্টন করা হবে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া সার, বীজ ও নগদ টাকা জেলার পাঁচটি উপজেলার ছয় হাজার কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।