রায়পুরের চরবংশীতে গরুর হাটের কর্তৃত্ব নিয়ে দুই গ্রুপ মুখোমুখি

প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দক্ষিন চরবংশী ইউপির মোল্লারহাট বাজারের গরুর হাটের কর্তৃত্ব নিতে এখন মুখোমুখি অবস্থানে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দু’টি গ্রুপ ( সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা রশীদ মোল্লা গ্রুপ এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদ হাওলাদার গ্রুপ)।রশীদ মোল্লা পরিবারের অভিযোগ তাদের ৬ জনকে পিটিয়ে মারাত্নক আহত করে হারুনুর রশীদ হাওলাদারে পক্ষের লোকজন। আহত – আ’লীগকর্মী মোঃ হুমায়ুন (৩৫), রুহুল আমিন (৪২), আলমগীর হোসেন (৩৭), দুলাল সৈয়াল (৪৮), বেলাল হোসেন (৪২) ও আলমগীর মোল্লাকে (৩৮) রায়পুর এবং সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় শনিবার বিকালে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে মোল্লারহাট বাজার ও বেড়িবাঁধের ওপর উভয় পক্ষের লোকদের মধ্যে উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করতে দেখা গেছে।
মোল্লারহাট বাজারের ব্যাবসায়ী, চরকাছিয়া গ্রামবাসী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, বিগত ৩০ বছর ধরে দক্ষিন চরবংশী ইউপি পরিষদের সামনে মোল্লারহাটবাজার গরুর হাট আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশীদ মোল্লা গরুর হাটটি নীজেদের দাবি করে দখলে রেখে খাঁজনা আদায় করেন।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রায়পুরের মোল্লারহাট বাজারে গরুর হাটটি স্থান পরিবর্তন করে বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ হাওলাদার তার জমিতে নিয়ে ইউনিয়নের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে খাঁস কালেকশান করে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেয়ার দায়িত্ব দেন উপজেলা প্রশাসন।
গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রশীদ মোল্লা তার লোকজন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গরুরহাটটি পুনরায় এনে খাজনা আদায় করে। শনিবার (৫ অক্টোবর) গরুর হাট একই স্থানে বসার প্রস্তুতি নেয়ার সংবাদে শুক্রবার বিকালে ও শনিবার সকালে দুই দফায় রশীদ মোল্লার পক্ষের ৬ জনকে পিটিয়ে পারাত্নক আহত করে হাসপাতাল পাঠায় হারুনুর রশীদের লোকজন।
গরুর হাট দখল ও কর্মীদের মারধর করার প্রতিবাদে শনিবার সকাল দশটায় (৫ অক্টোবর) মোল্লারহাট বাজার, খলিফারহাট ও গাইনেরব্রীজ এলাকায় দুই পক্ষের লোকজন দশীয় অস্র নিয়ে মারমুখি অবস্থান নেয়। তবে কোন মারামারি বা হতাহত হয়নি।। এই সংবাদ শুনেই এসিল্যান্ড শাহেদ আরমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই উভয়পক্ষের লোকজন স্থান ত্যাগ করেন (মোল্লারহাট গরুর বাজার)। পরে এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে সার্ভেয়ার খাস কালেকশান করে।
এঘটনায় দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা আবদুর রশীদ মোল্লা বলেন, আমাদের নিজস্ব জমিতে গড়ে ওঠা গরুর হাটটি ৫ আগষ্টের পর থেকে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান হারনুররশীদ হাওলাদর নেতৃত্বে তার লোকজন প্রশাসনের নাম দিয়ে দখল করে নেয়। শুক্রবার আ’লীগের ৬ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। আমি বিচার দাবি করে লক্ষ্মীপুর সেনাক্যাম্পে ও রায়পুর ইউএনওর কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদ হাওলাদার বলেন, আ’লীগ নেতা রশীদ মোল্লা গত ৩০ বছর ধরে অবৈধভাবে গরুর হাট ও মেঘনার চরে মানুষের হাজার হাজার একর জমি দখল করে আসছিলো। ৫ আগষ্টের পর পালিয়ে গেলে ইউএনও পরিষদের লোকদের দিয়ে খাসকালেকশান করে। সেনাক্যাম্পে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে। কে কাকে মারধর করছে, তা জানিনা। এ ঘটনায় আমি বা আমার লোকজন জড়িত না।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খাঁন বলেন, মোল্লারহাট বাজারের গরুর হাট দখল ও মারামারি ঘটনার সংবাদ শুনেছি। ঘটনাস্থলে এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গরুর হাটের খাস কালেকশান ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের দিয়ে তুলে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হবে।

আরও পড়ুন