সারোয়ার হোসেন, রামগতি সংবাদদাতা: শত বছরের ঐতিহ্য রামগতি বাজার মাছঘাট স্থানান্তর না করতে বিক্ষোভ ও শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছে মাছঘাট, বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি প্রাচীন ও ব্যবসায়ীমূখর এ মাছঘাটটি স্থানান্তর করা হলে জনবহুল বাজারটি তার ঐতিহ্য হারিয়ে মরা বাজারে পরিনত হবে। এমন দাবিতে রবিবার রাতে বিক্ষোভ এবং সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ, মানববন্ধন এবং ব্যবসায়ীরা শার্টডাউন কর্মসূচি পালন করছে তারা। এ সময় হাজারো মানুষ বাজারের জিরো পয়েন্ট জড়ো হয়ে কালো পতাকায় মুখ বেঁধে নানান শ্লোগান দিতে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রামগতি বাজারে শাটডাউন কর্মসূচি পালনের ফলে সহস্রাধিক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। প্রধান প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বয়ারচর টাংকির খাল পাড়ে স্থাপিত রামগতি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে জেলেরা মাছ না নিয়ে রামগতি বাজার মাছঘাটের গদিতে মাছ উঠানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ বাজারটি ধ্বংসের জন্য একমাত্র মাছঘাটটি স্থানান্তর করছে সরকার। আমরা এটি কোনভাবেই চাই না। আমাদের দাবি মাছঘাটটি এখানেই বহাল থাকুক। এ দাবিতে প্রয়োজনে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।
রামগতি বাজার মাছঘাট বহাল রাখা আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন রামগতি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মীর আকতার হোসেন বাচ্চু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মীর আরাফাত। তারা জানান, যে কোন মূল্যেই হোক মাছঘাটটি বাজারে রাখতে হবে। জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় এটি স্থানান্তর করা প্রতিহত করা হবে। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের দাবি প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা আমাদের ৫সদস্যের কমিটিকে আলোচনার জন্য ডেকেছে। দাবি না মানা হলে আরো কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। এসব কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের শুরা কমিটির সদস্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান, ব্যবসায়ী নেতা মাহবুব আলম নয়ন, ফারভেজ আলম, শিক্ষক নেতা গোলাম শওকত এমরান, মীর খবির উদ্দিনসহ প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ।
রামগতি বাজার মাছঘাটের ব্যবসায়ী মো: ফারুক, আজাদ উদ্দিন জানান, একটি মহল বহু আগ থেকেই মাছঘাটটি বাজার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে চায়। আমরা এতে সম্মত নয়। কেননা ওখানে নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এলাকা, ডাকাত ও জলদস্যূ আক্রান্তের শংকা রয়েছে। ওখানে ব্যাংকিং ব্যবস্থাও নেই। এতো নিরাপত্তাহীনতায় আমরা সেখানে যেতে রাজি নই। জেলেদের অভিযোগ ২২দিনের মৎস্য আহরন নিষিদ্ধের সময়সীমা শেষের আগের দিন হুট করে মাছঘাট স্থানাস্তরের উদ্যোগ মেনে নেওয়া যায় না।
রামগতি বাজারের স্থায়ী বাসিন্দা মীর তানভীর হোসেন জানান, আমাদের দাবি উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর মেনে নিয়েছে। সুতরাং মাছঘাট বাজারেই বহাল থাকবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: সৌরভ-উজ-জামান জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, স্থানীয় ব্যবসায়ী, জেলে, ট্রলার মালিক, স্টকহোল্ডার ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে আলোচনা করে তাদের দাবি ও যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিকভাবে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে মাছঘাট পূর্বের স্থানে বহাল থাকবে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে মাছঘাট বাজারেই বহাল থাকবে।