প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে হিরালাল দেবনাথ(৫৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে চুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার কাজিরদীঘির পাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত হিরালাল দেবনাথ সদর উপজেলার উত্তর হামছাদীর কাজিরদিঘীরপাড় এলাকার প্রপুল্ল কুমার দেবনাথের ছেলে। তবে কি কারনে এই হত্যকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেটা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা হাসপাতালে গিয়ে নিহতের স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, হিরালাল দেবনাথ কাজিরদিঘীরপাড় বাজারে মাতৃশিল্পালয় নামে একটি জুয়েলারীর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করতেন তিনি। ব্যবসার কার্যক্রম শেষ করে প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাত ৯টার দিকে হিরলাল দেবনাথ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মোটরসাইকেল যোগে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। বাড়ির পাশে মোটরসাইকেল থেকে তাকে নামিয়ে দিয়ে সামনের দিকে চলে যায় হিরালাল দেবনাথের ছেলে। এসময় ওঁৎপেতে থাকা দূর্বৃত্তরা হিরালাল দেবনাথকে গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তার বুকে দুইটি চুরিকাঘাত করলে মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তার শোর-চিৎকার শুনে ছেলে প্রীতম দেবনাথ এগিয়ে আসলে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক হিরালাল দেবনাথকে মৃত ঘোষনা করেন।
এদিকে বাজারের প্রতিবেশী কাপড়ের দোকানের ব্যবসায়ী যতন দেবনাথ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে দাবী করেন নিহতের ছেলে প্রীতম দেবনাথ। তিনি দাবী করেন, তাদের দোকানের সামনে প্রায় পাশ^বর্তী ব্যবসায়ী যতন দেবনাথরা কাপড় ঝুলিয়ে রাখে। এতে দোকানের সামনে অন্ধকার থাকে। এ নিয়ে প্রায় কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাতের অন্ধকারে তার বাবাকে চুরিকাঘাত হত্যা করে যতন দেবনাথ ও তার সহযোগিরা। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি। এদিকে ঘটনার পর থেকে যতন দেবনাথ পলাতক রয়েছে।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কমলাশীষ জানান, হিরালাল দেবনাথ প্রচুর রক্তক্ষরনে মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে তার মৃত্যু হয়। তার বুকে দুইটি চুরিকাঘাত রয়েছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের (বাজুস) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি সমির কর্মকার বলেন, আমাদের এক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধি দল হাসপাতালে গেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদেরকে চিহ্নিত করতে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, পারিবারিক না ব্যবসায়ীক দ্বন্ধে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে সে বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। জড়িতদের চিহিৃত করে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।