সালিসে কিশোরীকে ভৎসনা, অপমান সইতে না পেরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা

প্রতিনিধি: জেলার রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে জান্নাত বেগম (১৬) নামের এক কিশোরীর আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সাথে জড়িত মো. হেলাল নামের একজনকে আটক করেছে রামগতি থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার এ ঘটনা ঘটে । কিশোরীর  পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের বিচারের নামে সালিসে তাকে উল্টো ভৎসনা করেছিলেন গ্রামের মাতব্বরেরা। এই অপমান সইতে না পেরে জান্নাত আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
এ ঘটনায় ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে  কিশোরীর মা সেলিনা বেগম বাদি হয়ে গত শুক্রবার রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এতে রাকিব হোসেন নামের এক যুবকসহ প্রতিবেশী ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ প্রতিবেশী মো. খবিরের ছেলে মো. রাকিবের সাথে গত ৬-৭ মাস ধরে জান্নাতের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে গত শনিবার গভীর রাতে জান্নাতের বসতঘরে ডুকে জোরপুর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এসময় জান্নাতের মা সেলিনা আক্তার টের পেয়ে মেয়ের কক্ষে গেলে রাকিব দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রাকিব তাকে এর আগেও কয়েকবার ধর্ষণ করেছে বলে জান্নাত তার মাকে জানায়।
ঘটনাটি তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত রাকিবের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বারণ করে এবং জান্নাতকে ছেলের বউ হিসেবে  মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। পরে এলাকায় জানাজানি হলে পরের দিন গত মঙ্গলবার স্থানীয় হেলাল, মো. আজাদসহ শালীস বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মো. বাশার, জামশেদ উদ্দিনসহ অভিযুক্তরা জান্নাতকে চরিত্রহীনাসহ বিভিন্ন ধরণের অপবাদ দেয়। এসময় হেলাল জান্নাত ও তার মা সেলিনা বেগমের মাথার চুল কেটে এলাকায় ঘুরানোর হুমকি দেয়। এতে মানসিক চাপে পড়ে  বসতঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে জান্নাত। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, এই ঘটনায় রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত মো. হেলাল নামের একজনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন