ভালোবাসা দিবসে শুধু তরুণ-তরুণীর যুগল প্রেম নয়। এর বাইরেও যে ভিন্ন কিছু হতে পারে, তা দেখিয়ে দিল টাঙ্গাইলের হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের খুদে শিক্ষার্থীরা। বিশেষ এ দিনে মায়ের পা ধুয়ে শ্রদ্ধা জানাল প্রায় দেড় শতাধিক শিশু। প্রতিবারের ন্যায় এবারও টাঙ্গাইল জেলা শহরের এসপি পার্কে এমন ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এসপি পার্কে মা’দের হাত ধরে আসতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এরপর মায়েরা পার্কে সারিবদ্ধভাবে বসলে মগে করে পানি নিয়ে তারা পা ধুয়ে দেয়। এরপর ভালোবাসার স্লোগান সম্বলিত মেডেল মায়েদের গলায় পরিয়ে দেয়। এ সময় সন্তানদের এমন ভালোবাসায় আবেগ-আল্পুত হন মায়েরা।
অভিভাবক বাধন চৌধুরী বলেন, সন্তানের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পাব, কখনো কল্পনা করিনি। শিশুদের ছোট থেকে যা শেখানো হবে বড় হয়ে তারা তা অনুসরণ করবে। স্কুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এ রকম অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছোট থেকে মা-বাবার প্রতি সন্তানরা দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ হবে।
শিশু অধরা দাস বলে, আমি মায়ের পা ধুয়ে দিয়েছি। মাকে মেডেল পরিয়ে দিয়েছি। আমার খুব ভালো লাগছে।
এদিকে অনামিকা নামে আরেক শিশু বলে, মাকে অনেক ভালোবাসি। মা যখন অফিসে থাকে আমি খুব মিস করি। আজকে মাকে সারা দিন পেয়েছি। মায়ের পা ধুয়ে দিয়েছি। এখানে বন্ধুরা অনেক মজা করেছি। শিক্ষকরা আমাদের মজার-মজার চকলেট উপহার দিয়েছেন।
এ বিষয়ে হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের চেয়ারম্যান নওশাদ রানা সানভী জানান, আমরা মনে করি ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসা পাওয়ার প্রথম ভাগিদার মা-বাবা। যদিও তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের কোনো বিশেষ দিন প্রয়োজন হয় না। বিশেষ এই দিনে শিশুদের মনে বাবা-মায়ের প্রতি অটুট ভালোবাসা এনে দিতেই এই আয়োজন করে থাকি। আমরা প্রতিটি শিশুকে শিখিয়ে থাকি বড় হয়ে ভালো মানুষ হতে হবে এবং নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন স্কুলের উপদেষ্টা ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরোয়ার আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস.এম সিরাজুল হক আলমগীর, জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, ডেইরি স্টারের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি মির্জা শাকিল, রাইট ফেয়ারের চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ সাথী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জান্নাত জিরিয়া খান ছোঁয়া।
এ সময় প্রধান অতিথি জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। শিশুরা তাদের মায়ের পা ধুয়ে সম্মান দেখিয়ে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এমন অনুষ্ঠান আমি প্রথম দেখলাম।