নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশ্বকাপে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা মেন্টর হচ্ছেন কি-না এনিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। আলোচনার শুরু তামিম ইকবাল অবসর ভেঙে ফেরার পর থেকে।
অভিমানে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললে তাকে গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপ্রধানের নির্দেশে তামিম তার সিদ্ধান্ত বদলান। পরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্বকাপে মাশরাফীকে মেন্টর হিসেবে চাওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে দু’দিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কথা বলেছেন। এবার মুখ খুললেন মাশরাফী নিজেই।
বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মেন্টর ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে মাশরাফী উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘মেন্টরে কী লাভ হয়? আমাকে একটু বলতে পারবেন? আমি জানি না, ও (তামিম) কেন চাচ্ছে! মেন্টর জিনিসটা তো অন্য জিনিস। মেন্টরের কাজটা কী আমি জানি না। সেরকম পরিস্থিতি এলে, তখন বলা যাবে। এখন এই মুহূর্তে আমাকে প্রশ্ন করলে এর উত্তর নেই।’
তামিম অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন মাশরাফী। তামিমের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ আলোচনা হয়। মাশরাফীকে মেন্টর হিসেবে চাওয়ার বিষয়টি তামিমই সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরেন।
মাশরাফী এ প্রসঙ্গে বলছেন, ‘বিষয়টা আমার কাছে মনে হয় একটু ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। যেটা হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তামিমের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। এটা পুরোপুরি উনার ইচ্ছা ছিল। উনি তামিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। উনি কী বলেছেন, সেটা তো ব্যক্তিগতভাবে তামিমের সঙ্গেই কথা হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, ইতিবাচক কথাই হয়েছে। সেই কারণেই তামিম আবার ক্রিকেটে ফিরেছে। এখানে অন্য কাউকে মেশানো ঠিক হবে না। এটা একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল, তামিমের সঙ্গে কথা বলার। সেটাই হয়েছে। বাকিটা তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তামিমের মধ্যেই কথা হয়েছে।’
তাকে তামিমের মেন্টর হিসেবে চাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘সেটা ভিন্ন জিনিস। আমার কোনো মাইন্ড সেট-আপ নেই। আমি আগেও বলেছি, আমার এরকম কোনো মাইন্ড সেট-আপ নেই। আপনারা যে প্রশ্ন করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরও নেই আমার কাছে। তো আমি কোনো কিছু জানি না। আমার বর্তমানে কী কাজ সেইটা শুধু জানি। কালকে যেটা কাজ আসবে, সেটা করব। পরশু দিনের কথা বলা বা কালকের চিন্তা করার এখন আমার সময় নেই।’
কখনো দলে মেন্টরের প্রয়োজন হলে বা প্রধানমন্ত্রী তেমন কিছু চাইলে সেটা ভিন্ন বিষয় বলে উল্লেখ করেন মাশরাফী, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু ডিজায়ার করলে সেটা ভিন্ন জিনিস। সেটার সাথে তর্কে যাওয়ার বা কথা বলার সুযোগ নেই। সেরকম কোনো কিছু ঘটলে তখন দেখা যাবে। এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দল ভালো থাকা, দল ভালো খেলা। যেটা আমরা সবাই আশা করছি।’
দুদিন আগে একই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, ‘এসব এখন বলার কোনো সুযোগই নেই। বিশেষ করে ওখানে (গণভবনে) যে আলাপ হয়েছে, ওখানেই থাকুক। এসব নিয়ে বাইরে আলাপ করার কোনো প্রশ্নই আসে না।’
উল্লেখ্য, ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবশেষ দুই আসরে মাশরাফীর নেতৃত্বে খেলেছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালের মার্চে ওয়ানডের নেতৃত্ব ছাড়েন মাশরাফী। এরপর থেকে আর জাতীয় দলেও ডাক পাননি তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একেবারেই দূরে তিনি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেন।