নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে পুলিশের করা দুই মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে পৃথক আদালত। এরমধ্যে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফারহানা ভূঁইয়া ৭ জনকে ও বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মুমিনুল হাসান ৯ জনকে কারাগাওে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, বিএনপির ৭ নেতাকর্মী জামিন আবেদন করলে যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত তা নামঞ্জুর করেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরআগে তার উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের নাজির ইয়াসিন আরাফাত বলেন, পুলিশের দায়েরকৃত দুটি মামলায় ৯ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক হাসিবুর রহমান অভি, যুগ্ম-আহবায়ক ইসমাইল হোসেন রনি, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক কাউসার হোসেন, সদর (পশ্চিম) উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক জাকির হোসেন, পার্বতীনগর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মুরাদ হোসেন, লক্ষ্মীপুর পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মুশফিক মাহমুদ সাদনান, চররমনী মোহন ইউনিয়ন বিএনপি কর্মী বোরহান ভান্ডারী, সদরের উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রায়হান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার নাফিস, দালাল বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাওন পাটওয়ারী, উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি মো. রাজু, চররুহিতা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাগর হোসেন, লক্ষ্মীপুর পৌর ১০ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক বাবুল হোসেন, রায়পুরের সোনাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য ইউছুফ হোসেন, সোনাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. ইমন ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
জেলা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক ফারহান উদ্দিন সিফাত বলেন, বিএনপি ও ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকর্মী পৃথক আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এরআগে তারা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১৮ জুলাই বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালীন পুলিশের দায়িত্ব পালন কাজে বাধা, পিটিয়ে আহত, বিস্ফোরক ও নাশকতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫৫ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাত ৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দুই মামলাতেই বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও জেলা কমিটির আহবায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে প্রধান আসামি করা হয়। এরপর আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) আদালতে জামিন শুনানি থাকলেও বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খাঁয়ের ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু আদালতে উপস্থিত হননি। এতে আদালত তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন। জামিন না মঞ্জুর করে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক হাছিবুর রহমান হাছিব, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম, সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম রাজন, নাদিম মাহমুদ জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, লক্ষ্মীপুর পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল বারাকাত সৌরভ বুলেট, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব বায়জিদ হোসেন ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন ও যুবদল কর্মী মো. সোহেলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।