রামগঞ্জ সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হয়নি সড়ক সংস্কার। ফলে ধুলোবালি আর বর্ষা মৌসুমে কাঁদাপানির সাথে যুদ্ধ করে জীবন পার করছে গ্রামবাসী। এমন পরিস্থিতি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলাধীন ইছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের মঙ্গলা বাড়ি থেকে শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে। সড়কটি ধরে প্রতিদিন সহস্রাধিক গ্রামবাসী উপজেলা শহর, সোনাপুর বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে চলাচল করলেও পথচারীদের সুবিধার্থে কয়েক বছরেও হয়নি রাস্তা সংস্কার। এ নিয়ে গ্রামবাসী বার বার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোন সুফল পাচ্ছে না। ফলে নিত্যদিনকার চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামের নারী-শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে অসুস্থ রোগী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তাৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে রামগঞ্জের ইছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের ওই সড়কটির নির্মাণ হলেও আওয়ামীলীগের ১৫ বছরের সড়কটিতে আর হাত দেওয়া হয়নি। এতে জনসাধারণের চলাচলের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের ওই সড়কটি ধরে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত রয়েছে। স্থানীয় শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নূরানী মাদ্রাসা, মসজিদসহ আশপাশের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনকার স্কুলে আসা-যাওয়ার অন্যতম রাস্তা এটি। কিন্তু, সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এ পথ ধরে চলাচল করতে তাদেরকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও অসুস্থ বৃদ্ধদের ক্লিনিক-হাসপাতালে আনা নেয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পথচারী ও স্থানীয়দের।
সড়কটির ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমা আক্তার জানায়, বৃষ্টির হলে এখান দিয়ে যেতে খুব সমস্যা হয়। মাটির রাস্তা হওয়ায় কাদাপানিতে ড্রেস নষ্ট হয়ে যায়। এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে আমাদের জন্য অনেক সমস্যা হচ্ছে। আরাফাত হোসেন নামের ১০ম শ্রেণীর আরো এক শিক্ষার্থী জানায়, রাস্তায় সবসময় কাদা থাকে। জুতা হাতে নিয়ে আর প্যান্ট গুটিয়ে চলতে হয়। বৃষ্টি হলে সেদিন আর স্কুলে যেতে পারি না। স্কুলে না গেলে স্যাররা বকা দেয়।
সড়ক পথে চলাচলে এলাকাবাসীর এমন পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয় একাধিকবার আমাদের পরিষদে বলছি। চেয়ারম্যান এসে দেখে গেছে। তবে উপজেলা ইঞ্জিয়ার ও চেয়ারম্যান আশ্বস্থ করেছে আগামী কয়েকমাসের মধ্যে সড়কটি সংস্কার হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান বলেন, রাস্তাটি অনেক পুরাতন। মানুষের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমি এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। এটি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সংস্কার হবে।
এদিকে উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা সাজ্জাদ মামুন খান বলেন, ওই স্থানে গিয়ে আমরা সড়কটি পরিদর্শন করে আসবো। উপজেলা ব্যাপী সড়ক গুলো সংস্কার করা এখন সময়ের দাবী। পর্যায়ক্রমে সব গুলো সড়ক সংস্কার করা হবে। তার দাবী, কিছু সড়ক টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টি পরিস্থিতির কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে। আশাকরি খুব দ্রুত এই সড়কটি সহ বাকি সড়ক গুলো পর্যায়ক্রমে শেষ হবে।