ফ্রান্সের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর আররাসে ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষক নিহত ও অপর দুই শিক্ষক গুরুতর আহত হওয়ার পর জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশজুড়ে ৭ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করছে ফ্রান্স।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সেনা মোতায়েনের কাজ আগামী সোমবারের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিসি প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস।
শুক্রবার ফ্রান্সের আররাস শহরের লাইসি গ্যামবেটা স্কুলের শিক্ষক ডোমিনিক বেরনার্ডকে প্রকাশ্য দিবালোকে একের পর এক ছুরিকাঘাত করে খুন করে মোহম্মদ মোগুশকভ নামের ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। তাকে বাধা দিতে গিয়ে স্কুলের অপর দুই শিক্ষকও গুরুতর আহত হন।
মোহাম্মদ মোগুশকভ ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জানা গেছে, তার পরিবার রাশিয়ার চেচনিয়া থেকে ফ্রান্সে এসে স্থায়ী হয়েছিল। অনেক ফরাসি সংবাদমাধ্যম অবম্য জানিয়েছে, ওই মোহাম্মদের পরিবার ইনগুশ নামের একটি রুশ জনগোষ্ঠীর। ইনগুশ জনগোষ্ঠীর লোকজন সুন্নি মুসলিম ধর্মাবলম্বী।
মোগুশকভের এক ভাই ইউরোপভিত্তিক একটি ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে কারাগারে আছে। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রমাণও পাওয়া গেছে। ভাই কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই মোগুশকভের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছিল বলে জানা গেছে ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৩ শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হতাহত করার পর মোহম্মদ মোগুশকভকে উচ্চকণ্ঠে ‘আল্লাহু আকবর’ উচ্চারণ করতে শুনেছেন তারা।
ফ্রান্সের আররাস শহরটি মূলত মুসলিম ও ইহুদি অধ্যুষিত। ঠিক কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী কৌঁসুলির কার্যালয় ইতোমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে, শুক্রবার এই ভয়াবহ হত্যা ঘটার পর ওই দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সেখানে নিহত শিক্ষক ডমিনিক বেরনার্ডের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘তিনি এগিয়ে এসেছিলেন বলে অনেক নিরপরাধ মানুষের হতাহত হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছে। আমরা কখনও সন্ত্রাসের কাছে পরাজিত হবো না। এমন কোনো কিছুকে আমরা কখনও প্রশ্রয় দেবো না— যা আমাদের বিভক্ত করে।’
সূত্র : এএফপি, রয়টার্স