মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছি : বেঁচে যাওয়া দুই বোন

হঠাৎ জোরে ট্রেনের বগি ঝাঁকুনি দেয়। পরে শুনতে পাই আমাদের ট্রেনের দুটি বগি পড়ে গেছে। তবে তখন মনে হয়েছিল এই বুঝি সময় শেষ হয়ে এসেছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা দুই বোন বেঁচে আছি। আমরাও তো এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতাম। এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাকিউস সামিরা জিনান।

এ দুর্ঘটনায় তিনি ও তার বোন নুসরাত জাবিন পৃথা প্রাণে বেঁচে যান। তারা কিশোরগঞ্জ সদর এলাকার বাসিন্দা।

তাকিউস সামিরা জিনান বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। পরে স্টেশন থেকে ট্রেনটি যখন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়; ঠিক এর এক মিনিটের মধ্যে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে আমাদের বগিটি খুব জোরে একটা ঝাঁকুনি দেয়। তখন চারদিকে শুধু চিৎকার আর আহাজারি শোনা যাচ্ছিল। পরে ট্রেন থেকে নেমে দেখি আমাদের ট্রেনের পেছনের দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে উল্টে আছে। সেখানে পড়ে ছিল অসংখ্য মরদেহ। এতগুলো লাশ কখনও সরাসরি দেখা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখে ভেতরটা কেঁপে উঠেছে। আর মনে হচ্ছে মৃত্যুর খুব কাছ থেকে বুঝি ফিরে এসেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা দুই বোন বেঁচে আছি। আমরাও তো এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতাম।’

নুসরাত জাবিন পৃথা বলেন, ‘আমরা দুই বোন পূজার ছুটিতে কিশোরগঞ্জ নিজ বাড়িতে এসেছিলাম। ছুটি শেষে আজ বিকালের ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে রওনা হই। ওই ট্রেনেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।’

এর আগে সোমবার বিকালে ভৈরব জংশনে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর আহত হয়েছে ৭০ জন কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

রেলওয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধান উঠে এসেছে, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল না মানায় এ সংঘর্ষ হয়েছে। পরে ওই ট্রেনটির চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন