নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে ধান কাটতেই কৃষক নাছির আহম্মেদের জমি দখল করে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কবির হোসেন নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে নাছির পরিবার নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নাছিরসহ স্থানীয়রা সাংবাদিকদের বিষয়টি জানায়।
এরআগে একই ঘটনায় গত ৫ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট চন্দ্রগঞ্জ আদালতে কবিরসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই জমিতে স্থীতিবস্থা বজায় রাখতে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
ভূক্তভোগী নছির সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের কুশাখালী গ্রামের ফয়েজ আহম্মেদের ছেলে।
অভিযুক্ত কবির কুশাখালী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে ও ইটভাটায় মাটি বিক্রি তার পেশা। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন কুশাখালী গ্রামের তাহের হোসেন, আনা হোসেন, হায়দার আলী, মো. করিম ও অজ্ঞাত ৬ জন।
মামলা সূত্র জানা যায়, ২০০২ সালে বাড়ির পাশেই নাছির ৭৯ শতাংশ ক্রয় করেন। প্রায় ২০ বছর ধরে ওই জমিতে তিনি চাষাবাদ করে আসছেন। জমিটি তার দখলেই রয়েছে। জমির খতিয়ানও তার নামে রয়েছে। খাজনাও তিনি পরিশোধ করে আসছেন। বর্তমানেও জমিতে আমন ধান রয়েছে। কিছুদিন পরই ধান কাটার জন্য উপযুক্ত হবে। এদিকে সম্প্রতি কবিরসহ তার লোকজন মালিকানা দাবি করে ওই জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। গত ৩ অক্টোবর লোকজন নিয়ে এসে ওই জমিতে খুঁটি স্থাপন করে। ৫ অক্টোবর আদালতে মামলা করার বিষয়ে জানতে পেরে একইদিন সন্ধ্যায় তারা এসে জমির পাশেই কয়েকটি গাছ লাগাই। এতে বাধা দিলে কবির ও অভিযুক্তরা নাছিরের স্ত্রী পারুল বেগম, ছোট ছেলে তারেক হোসেনকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে কবিরদের খুঁটিগুলো সরিয়ে নিতে বলে এবং জমিতে না আসার জন্য নির্দেশনা দেয়।
নাছির আহমেদ ও তার ছেলে ওমর ফারুক জানায়, কবির শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। জমিতে ধান আছে। ধান কাটলেই নাকি কবির জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করবেন। এতে পরিবারটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কবির হোসেন বলেন, বর্তমান জরিপে ওই জমিটি নাছির আহম্মেদের নামে রেকর্ড হয়েছে। এরআগে দিয়ারা জরিপে জমিটি আমাদের নামে রেকর্ড রয়েছে। এতে বর্তমান জরিপের বিরুদ্ধে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। ওই জমিতে আমরা খুঁটি ও গাছ লাগিয়েছে। নাছিরসহ তার ছেলেরা সেগুলো তুলে নিয়ে গেছে।
কুশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) কামাল হোসেন বলেন, নাছিররা এখানে জমি কিনে বসবাস করে আসছেন। নাছির ও কবিরদের সঙ্গে জমি নিয়ে সমস্যা চলছে। দলিল ও বর্তমান জরিপের রেকর্ড নাছিরের পক্ষেই রয়েছে। কিন্তু দিয়ারা জরিপের রেকর্ড হিসেবে কবির মালিকানা দাবি করছে। দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম, কিন্তু সমস্যা সমাধান হয়নি। যেভাবেই হোক এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হওয়া প্রয়োজন।
চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাসের হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জমি থেকে খুঁটি সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া হুমকির ঘটনাটি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।