লেখাপড়া করেই অনেক বড় হতে হবে: ঢাবি উপাচার্য

প্রতিনিধি:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, রায়পুরে প্রিন্সিপাল কাজি ফারুকি কলেজকে লক্ষ্মীপুর জেলা তথা বৃহত্বম নোয়াখালির শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মা-মলি রাজনীতিবিদ নয়-লেখাপড়া করেই অনেক বড় হতে হবে তোমাদের। সেই লক্ষে বেশি বেশি করে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে। স্কুল এন্ড কলেজটির ১২ বছর পূর্তি উৎসব ও দ্বিতীয় দিন পুর্ণ মিলনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিষ্ঠানটির ১২ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী উৎসব উদ্যাপন চলছে। শনিবার (২ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯টায় দ্বিতীয় দিনের উদ্যাপন শুরু করা হয়। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারী সকালে রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর শহরে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর মধ্য দিয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই উৎসব উদ্যাপন চলবে রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) পর্যন্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে যাঁরা লেখাপড়া করেছে, তাঁদের মধ্যে এমন একজনও পাওয়া যাবে না, কোনো না কোনো ভাবে দেশ-রাষ্ট্রে কিংবা চারপাশের মানুষ গুলোকে আলোকিত করার অবদান রাখেননি। ‘কলেজে প্রবেশ করলেই মনে হয় একটি সুশৃঙ্খল ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় এসেছি। শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতের পাশাপাশি কলেজ নিজেও ক্রমাগতভাবে প্রস্তুত হয়েছে। ১২তম বছরে দাঁড়িয়ে বোঝা যায়, কলেজের প্রভাব সমাজে, দেশে ও রাষ্ট্রে কত বেশি
মাকসুদ কামাল বলেন, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব ভালোভাবে শুরু করেও রাজনীতি, পরিচালনা পর্ষদের কিংবা বাইরের প্রভাবে তাদের অস্তিত্ব সমানভাবে টিকিয়ে রাখতে পারেনি। কিন্তু প্রিন্সিপাল কাজি ফারুকি স্কুল এন্ড কলেজ অব্যাহতভাবে এর প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম ১২ বছর ধরে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের (গভর্নিং বডি) সদস্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল মজুমদার তাঁর বক্তব্যে কলেজটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিবেদিতপ্রাণ অধ্যক্ষদের পরিশ্রম ও অবদান নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন। আরও বলেন, ঢাকা কমার্স কলেজের শুরুতে অধ্যক্ষ ছিলেন প্রিন্সিপাল কাজি ফারুকি স্যার। তখন আমি ছিলাম হিসাব বিজ্ঞান শিক্ষক। কলেজটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি দিনরাত এত পরিশ্রম করেন যে কয়েক বছরের মধ্যে অসুস্থ হন। তোমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম বয়ে আনবে, আরও বড় হবে।
উৎসবের দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রধান অতিথি লক্ষ্মীপুর-২ রায়পুরের এমপি এডঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, , ব্যক্তি জীবনের জন্য নৈতিকতার শিক্ষাও দেওয়া হয়। এই নৈতিকতা নিয়েই কলেজের শিক্ষার্থীরা বেড়ে ওঠেন, জীবনের পথে এগিয়ে যান। স্কুল এন্ড কলেজ নীরবে করলেও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সুনাম ও খ্যাতি সারা দেশে সরবে বিরাজ করছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আমিন। তিনি উপস্থিত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রম ও এর উদ্দেশ্য তুলে ধরেন তিনি। আজ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। শিক্ষাজীবনের উচ্ছল তারুণ্যে ভরা দিনগুলোয় ফিরে যাব। পুরোনো দিনের মুখ স্মৃতিগুলো হাতরে বেড়াব। পুরোনো বন্ধু ও সহপাঠীদের নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে আত্মহারা হব।
প্রফেসর কাজী ফারুকী কল্যাণ ট্রাস্টের কো-চেয়ারম্যান ডাক্তার কাজী মোঃ নূর উল ফেরদৌস বলেন, ‘এ মিলনমেলা শুধু আড্ডা ও ফুর্তির জন্য নয়, ১২ বছরের কলেজের মহান অর্জনগুলো জানব এবং ভবিষ্যতে কলেজের শিক্ষাসেবার মান অব্যাহত রাখতে ও উন্নয়নে করণীয়সমূহ সম্মিলিতভাবে নির্ধারণ করব।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উৎসবের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, লক্ষ্মীপুর-২ রায়পুরের এমপি এডঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, বিশেষ অতিথি যুব ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল মজুমদার, বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত এভারেষ্ট জয়ী নিশাত মজুমদার, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল বাকী, বি ইউ বি টির প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আলী নূর, রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ, পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট, ইউএনও নাজমা বিনতে আমিন, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাইনুদ্দিন পাঠান,এডঃ মারুফ বিন জাকারিয়া বক্তব্য দেন।
পরে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন, প্রিন্সিপাল কাজি ফারুকিয়ানদের সম্মাননা স্মারক, ডকুমেন্টরী প্রদর্শন, যুগপূর্তি স্বরণিকা, গুবাক তরু ও জার্নালের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আরও পড়ুন