বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম:চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।এ বিশাল কর্মযজ্ঞের সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী। একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে নগরীর নিম্নাঞ্চল। রোববার রাতের বৃষ্টিতেও তলিয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকা। কোথাও এলাকা হাঁটু পানি আবার কোথাও কোথাও কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ।

সোমবার সকাল ১১ টা। চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের কাচাঁবাজার এলাকা। সেখানে একটু বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক গৃহিনী। বাসা থেকে বের হযে দেখে সড়কে কোমর সমান পানি জমে গেছে। মেয়েকে স্কুলে না নিয়ে বাসায় ফিরতে হয়েছে তাকে। এ সড়কে যাতায়াত কারী অনেক কর্মজীবী মানুষকে কোমর সমান পানি মাড়িয়ে কর্মক্ষেত্রে যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও অনেকে রিকশার সহযোগিতা নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়।

চট্টগ্রামের আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ৯টার পর থেকে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিপাতের কারণে নগরের মোহাম্মদপুর, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, মুরাদপুর, শোলকবহর, ২ নম্বর গেট, বাকলিয়া ও আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার কোনো কোনো সড়কে কোমর সমান পানি জমেছে।

নগরের বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, বহদ্দারহাট থেকে জিইসি যেতেই নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। বৃষ্টি হলেই বাসার আশপাশ এলাকার সড়ক ডুবে যায়। আজকেও একই অবস্থা। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে অফিসে আসতে হয়েছে। জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে কখন রেহাই পাবো আল্লাহ ভালো জানেন। শুনেছি হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। প্রত্যেক বছর বলা হয়, আগামী বছর পানি উঠবে না। কিন্তু প্রতি বছরই পানি উঠছেই।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট। ওই সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জুনেই কাজ শেষ করার কথা ছিল।

কিন্তু প্রথম বছরে মূল কাজই শুরু করতে পারেনি সংস্থাটি। ফলে দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। বর্তমান মেয়াদ হচ্ছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এ সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবে না সিডিএ। সংশোধিত প্রকল্পে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরেছে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।

আরও পড়ুন