প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদরে বৌ-শাশুড়ীর পারিবারিক কলহ সমাধান করতে গিয়ে মামলার দুই নম্বর আসামি হলেন অহিদুজ্জামান নামে এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। সাজানো মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করছে গ্রামের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসী মামলার নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্তের জোর দাবি জানান। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের (৩ নং ওয়ার্ড) দক্ষিণ চরভূতা গ্রামের মুছার খাল ব্রিজের ওপরে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।মানববন্ধনে স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন- চর ভূতা গ্রামের হোটেল কর্মচারী মো. রাকিব হোসেনের স্ত্রী নাছিমার সঙ্গে তার মা খুরশিদা বেগম ও বোন শিমুর সঙ্গে প্রায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো।
৪ মাস পূর্বে বৌ নাছিমা বেগম ও শাশুড়ী খুরশিদা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে মারামারি হয়। ওই মারামারির সময় স্বামী রাকিব হোসেন নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের বাংলা বাজারে কর্মস্থলে ছিলেন। ঘটনার সময় বৌ-শাশুড়ী ঝগড়াঝাটি কথা শুনে সমাধান করতে যান স্থানীয় ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামান।
তখনকার সময় গৃহবধূ নাছিমা বেগম তার ওপর নির্যাতনের বর্ননা উল্লেখ করে স্বামী রাকিব হোসেন ও ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামানকে থানা পুলিশ আটক করে।
খবর পেয়ে কর্মস্থল থেকে থানায় আসেন স্বামী রাকিব হোসেন। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন উভয় পক্ষের মোবাইল কল লিস্ট উত্তোলন করেন। লক লিস্ট অনুযায়ী স্বামী রাকিব হোসেন নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ বাংলা বাজার ছিলেন। আর স্ত্রীর অভিযোগ ছিল স্বামী রাকিব হোসেন ঘরের বাহিরে দাঁড়ানো ছিল। ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামান ঘরে প্রবেশ করে (নাছিমা বেগম) তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন করে। বিষয়টি মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় থানা পুলিশ ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামানকে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি ও ইউসুফ আলীর মিয়ার জিম্মাদার হিসেবে ছেড়ে দেয়। এবং বৌ-শাশুড়ী পারিবারিক কলহ গ্রামে বসে সমাধান করতে নির্দেশ দেয়। এরপর স্ত্রী নাছিমা বেগম গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে না বসে বাবার বাড়ীতে চলে যান। সেইখান থেকে নাছিমা বেগম লক্ষ্মীপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। স্বামী রাকিব হোসেনকে ১ নম্বর ও ২ নম্বর আসামি করা হয় ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামানকে। এ মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধন শেষ গৃহবধূ নাছিমা বেগমের স্ত্রী রাকিব হোসেন বলেন- আমার ৯ বছরের সংসার। আমার স্ত্রী নাছিমা বেগম সবসময় আমার মা, ভাই-বোনদের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করতো। বাড়ির আশপাশের লোকজন সবাই জানে। আমি চাকরি করি বেগমগঞ্জের বাংলা বাজার একটি হোটলে। আমার সংসারে ১ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তান রয়েছে।
আমার সাজানো সংসারকে শেষ করছে আমার স্ত্রী নাছিমা বেগম। অহিদুজ্জামান আমার সম্পর্কে মামা হয়। তার বিরুদ্ধে আর আমার বিরুদ্ধে এখন আমার স্ত্রী মামলা করছে।
অহিদুজ্জামান মামা দুইটি মসজিদ কমিটির দায়িত্বে আছেন। এজন্য গ্রামে কোন পরিবারে সমস্যা হলে তিনি বসে সমাধান করে দেন। আজ আমার স্ত্রীর মামলায় আমি আর অহিদুজ্জামান মামা আসামি। আমি এ মামলার সঠিক তদন্তের দাবি করছি।
এতে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় ইউপি সদস্য আহসান উল্লাহ, সাবেক নরুল ইসলাম, মসজিদের ইমাম হেলাল উদ্দিন, আল-আমিন, স্বামী রাকিব হোসেন, শাশুড়ী খুরশিদা বেগম ও আবুল কালাম তিনি থানার অভিযোগের সাক্ষী ছিলেন।