প্রতিনিধি: অবশেষে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১৭ আগষ্ট (শনিবার) বিকালে দক্ষিন চরবংশী ইউপির মেঘনা নদীর খলিফাব্রীজও পানিরঘাট এলাকায় অভিযান চালান সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমান। এসময় ৫টি ড্রেজার ও পাইপ ধ্বংস করলেও ৬ বালুদস্যু পালিয়ে যায়।এর আগ গত ২ আগষ্ট মেঘনা নদীতে ড্রেজার ও পাইপ জব্দ করতে গেলে ভূমিদস্যুর লোকজন তহশীলদার তাজল ইসলামকে মারধর করে। এঘটনায় স্থানীয় কয়েকজনের নামে মামলা করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আমাদের নিয়ে যতই রিপোট করছেন, দেখছেন না, ? কোন লাভ হয়না। ইউপি মেম্বার, চেয়ারম্যান ও দুই ফাড়ি থানার পুলিশ ম্যানেজ করেই আমরা ২০ জন নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছি। গত ২৮ জুলাই লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উত্তর ও দক্ষিন চরবংশী ইউপির আলতাফ মাস্টার ঘাট সংলগ্ন এলাকার বালু দস্যু বিল্লাল কবিরাজ ও মিজান বেপারি এ দম্ভোক্তি করে বলেছিলেন।
উপকূলীয় অঞ্চল মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীসহ খাল বিল ও ফসলি জমি থেকে অবৈধ ‘বোমা’ (ড্রেজার) মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করছে প্রায় ৫০ জনের বালু দস্যু। এতে একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে বড় রাজস্ব, তেমনি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এলাকার রাস্তা-ঘাট, জমি, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে দস্যু চক্রটি তাদের অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এসব দেখার কেউ নেই।
গত ৩১ (জুলাই) মাসিক উপজেলা আইনশৃংলা সভায় দক্ষিন চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউএনও ইমরান খান ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রতি অনুরোধ জানান। ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত দুই বছর ধরে বলেই যাচ্ছিলাম, কাজ হচ্ছেনা।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুযায়ী সড়ক, কালভার্ট, বিভিন্ন স্থাপনার সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে নদী, খাল ও পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। এ আইনকে অবজ্ঞা করে রায়পুরের উত্তর ও দক্ষিন চরবংশী ইউপিতে প্রায় ৩০টা অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
মেঘনার তীরবর্তী তিনটি ইউনিয়নে ড্রেজার বাণিজ্যে জড়িত অন্তত ৫০ জন বালু দস্যু। তাদের মধ্যে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা, তার ছোট ভাই একই ইউপি সদস্য দিদার হোসেন মোল্লা, বাবুল মোল্লা, দুলাল মোল্লা, হাসেম চৌকিদার, নজরুল মেম্বারের ভাই, বাবুল বেপারি, মাসুদ, দুলাল সৈয়াল, জামাল, ফারুক সৈয়াল, জুলহাস মোল্লা, মোঃ সৈয়াল , মিন্টু মোল্লা, মোস্তফা মিয়া, আমির হোসেন, সোহেল হাওলাদার, আরিফুর রহমান মিস্টার, হারুন খাঁ, মোহাম্মদ আলী খাঁ, আলমগীর বেপারি, মনির দেওয়ান, মোঃ মিলন, শিমুল লস্কর, জাকির বেপারি, মিজান বেপারি, বিল্লাল কবিরাজ, মো. কামাল ও আনোয়ার হোসেন।
এবিষয়ে রায়পুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি শাহেদ আরমান বলেন, দক্ষিন মেঘনা নদী র পানিরঘাট ও খলিফাব্রীজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫টি ড্রেজার ও পাইপ জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। এসময় কয়েকজন বালু ব্যাবসায়ী পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা যায়নি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।