দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভায় বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে দলের প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে জনসভার মঞ্চ। প্রস্তুত করা হয়েছে জনসভার মাঠ। জনসভায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিভিন্ন দপ্তরের ৪২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঢেকে রাখা হয়েছে পুরো জেলা।
এদিকে জনসভাকে ঘিরে কোটালীপাড়া উপজেলায় সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে জনসভাস্থল। স্থানীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে কোটালীপাড়া-ভাঙ্গারহাট রোডের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় নেতারা বলছেন, এবারের জনসভায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। আগামী বছর সংসদ নির্বাচন। এজন্য দলের সভানেত্রী নানা ধরনের দিক-নির্দেশনা দেবেন।
এ সফরে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং তার নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় জনসভায় বক্তব্য দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, হেলিপ্যাড নির্মাণ, কোটালীপাড়ায় মঞ্চ তৈরি ও মাঠ প্রস্তুতের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা থেকে সড়ক পথে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তার সফর সঙ্গী হবেন ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিন সকালে তার নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় ৪২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা রয়েছে তার। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকায় জনসভায় বক্তব্য দেবেন।
এরপর দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স এলাকা ধোয়া-মোছাসহ নানা ধরনের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। হেলিপ্যাড নির্মাণ, কোটালীপাড়া তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ তৈরি ও মাঠ প্রস্তুতের কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। জেলা সদর ও টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সফরের এলাকা। তল্লাশি চালানো হচ্ছে পুরো এলাকায়। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেক পোস্ট।
গোপালগঞ্জের প্রবেশদ্বার মুকসুদপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত অসংখ্য গেট বানানো হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। জেলার সর্বত্র নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজসাজ রব বিরাজ করছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ঘরের মেয়েকে বরণ করতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। কখন আসবে সেই মুহূর্ত। আমরা এলাকাবাসী খুবই ভাগ্যবান। আমাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সামনে সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের উপজেলার সবাইকে তিনি নৌকায় ভোট দিতে আহ্বান জানাতে পারেন।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহাবউদ্দিন আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে, বইছে উৎসাহ-উদ্দীপনা, তোরণ, ব্যানার আর ফেস্টুনে নতুন সাজে সেজেছে গোপালগঞ্জ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর কোটালীপাড়ায় এই জনসমাবেশে অংশ নেবেন। তাই আশা-আকাঙ্খা নিয়ে আছেন সাধারণ মানুষসহ নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়াসহ জেলার সর্বত্র তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোক, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, এসএসএফ অবস্থান নিয়েছে গোপালগঞ্জে।