লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ৬নং কেরোয়া ইউনিয়নের লামচরী গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডে মাঈন উদ্দিন ব্যপারী বাড়ীর একই পরিবারের মহিলা ও শিশুসহ ৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খাদ্য ও অর্থ সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছে। একবেলা খেলে অন্য বেলায় উপোস থাকতে হয় তাদের। রোজার মাসে ঠিকমতো সেহরি খাওয়া ও ঠিকমতো খেতে পারছে না। পরিবারের সদস্যরা অন্তত দুইবেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে চায়। গৃহকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, অভাব তাদের নিত্যসঙ্গী। এই রমজানেও অনেক সময় সেহরি না খেয়ে রোজা রাখতে হয়েছে তাদের। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ মোহাম্মদ ইসমাইল(৫৫) তার ৩ ছেলে ও এক বোন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বড় ছেলে রহমত উল্যা (৩৫) জন্মগতভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তৃতীয় ও চতুর্থ ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আয়াত উল্যা ও নেয়মত উল্যা। পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সকলেই কোরআনে হাফেজ।
তাদের বাবা হাফেজ ইসমাইল এর সংসারে তাদের ফুফু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আমেনা বেগম একইসঙ্গে বসবাস করে। তার ভরণ-পোষণের দায়-দায়িত্ব ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বড় ভাই হাফেজ ইসমাইলের উপর। ইসমাইলের বাবা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ কেরামত আলী পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পরে এই পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়ে। ইসমাইলের মা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রোমানা বেগম, ৬ বছর আগে খাদ্যনালি শুকিয়ে অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে মৃত্যুবরণ করেন। হাফেজ ইসমাইল আরও জানান, অর্থ সংকট মাথায় নিয়ে প্রতিদিন ভোরে তাদের ঘুম ভাঙে। সরকারি প্রতিবন্ধী যে ভাতা পান তা নিতান্তই অপ্রতুল। তাদের পরিবারে রোজগার করার মতো কেউ নাই। এই কারণে তাদের অর্ধাহারে-অনাহারে কাটাতে হয়।
কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরিবারটির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাহায্য সহযগিতার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়। তাদেরকে সরকারি বরাদ্দও দেয়া হয়ে থাকে। ওই পরিবারের দুইজন নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। তারপরেও পরিষদ থেকে এবং সমাজের বিত্তবানদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে তাদেরকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। সমাজের বিত্তবানরা তাদের কথা চিন্তা করে সাহায্য সহযোগিতার হাত বারালে পরিবারটির অভাব কেটে যাবে।