লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নে সাগরে মাছ ধরা জেলেদের সংখ্যা ২ হাজার ২৫০ জন। ওই ইউনিয়নে জেলেদের দ্বিতীয় পর্যায়ের চাল বরাদ্দ হয়েছে ৬৭ দশমিক ৫শ’ টন।
ভুক্তভোগী মনির, জাহাঙ্গীর, রিয়াজ, মো. আব্বাস, মো. দিদার হোসেন, আয়ুব মাঝি, ইউনুছ মাঝি ও কবির হোসেনসহ অন্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার জেলেদের মাঝে ৩০ কেজি হারে চাল বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা জেলেরা তাদের সরকার নির্ধরিত বরাদ্দের ৩০ কেজি চাল নিতে আসেন। এ সময় ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে জেলেপ্রতি চাল দেয়া হয় ২০ থেক ২২ কেজি করে। এতে প্রায় ১৮ থেকে ২২ টন চাল জেলেদের কম দেয়া হয়েছে তারা জানান।
যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৮/১০ লাখ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদের একটি সূত্র জানায়, ভিজিএফ’র চাল উত্তোলনে চেয়ারম্যান কারও সঙ্গে কোনো যোগযোগ করেন না। হঠাৎ আমাদেরকে ফোন করে চাল বিতরণ আছে বলে জানান। এর আগেও চাল বিতরণে বড় অনিয়মের অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
পরবর্তীতে সকল মেম্বারদেরকে একটি সুবিধা দিয়ে মীমাংসা করেন তিনি।
সূত্রটি আরও জানায়, চেয়ারম্যান রাতে সিএনজিযোগে ভিজিএফ’র চাল বিভিন্ন জায়গায় পাচার করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোনীত ইউনিয়ন ট্যাগ অফিসার উপস্থিত না থাকায় এমন কাণ্ড ঘটেছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় নিবন্ধিত মোট জেলের সংখ্যা ২৪ হাজার ৫৭০ জন। চরপোড়াগাছা ইউনিয়নে গভীর সাগরে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৭ হাজারের বেশি। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ২০শে মে থেকে ২৩শে জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম পর্যায়ের চাল ৫৬ কেজি করে ইতিপূর্বে বিতরণ করা হয়েছে। বাকি বরাদ্দের দ্বিতীয় পর্যায়ের ৩০ কেজি চাল বিতরণ শেষ পর্যায়ে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ট্যাগ অর্ফিসার মো. দিদার হোসেন বলেন, ওই চাল বিতরণের সময় দুইদিন আমি অনুপস্থিত ছিলাম। মৎস্য অফিস বিষয়টা ভালো জানে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. জসিম উদ্দিন জানান, ওই ইউনিয়নে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ হয়েছে। এখনো কিছু চাল রয়েছে যা বিতরণ হবে। তবে চাল ওজনে কম দেয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি তিনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন হাওলাদার জানান, জেলেদের চাল আমি ত্রিশ কেজি করে দেই নাই। প্রতি বস্তায় ২/১ কেজি করে কম হতে পারে বলে জানান তিনি।