নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে প্রায় এক হাজার হতদরিদ্র পরিবারের জীবনমান। যে মানুষগুলোর একসময় ছিল না কোনো স্থায়ী ঠিকানা, খাসজমি অথবা অন্যের জমির ওপর ভাঙা ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করতেন। আজ তারা নিজস্ব ঠিকানায় স্থায়ী নিবাসে বসবাস করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না স্লোগানে রামগতি উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট ১৮টি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার চরপোড়াগাছা, আলেকজান্ডার, চরআলগী, চররমিজ, চরবাদাম ও চরগাজী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২০ কোটি ৫৯ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে ৯৯০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।
উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণের বাসিন্দা শামসুন্নাহার (৫৫) বলেন, ‘আগে ছোট ভাঙা ঘরে সন্তান নিয়ে শীত-বৃষ্টির সাথে লড়াই করে অন্যের জমিতে টং ঘরে থেকেছি। এখন সরকার নতুন ঘর দেওয়ায় পরিবার নিয়ে নিজের ঘরে নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছি।’
আলেকজান্ডার ইউনিয়নের চরডাক্তার আশ্রয়ণের বাসিন্দা আলী আহমদ (৬৯) বলেন, ‘শেষ বয়সে সরকারের জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে এখন অনেক সুখে আছি।’
চরসীতা আশ্রয়ণের বাসিন্দা সিরাজুল হক ও বিবি আমেনা বলেন, ‘পাকা ঘরে থাকব কখনও কল্পনা করিনি। প্রধানমন্ত্রী ঘরসহ জমিও দিয়েছেন। ঈদ ও বিশেষ দিনে সরকার বিভিন্ন সহায়তাও দেয়।’
জুলাইখা বানু, কুলছুম আক্তার ও শাহনাজ বলেন, ‘আমরা ভীষণ খুশি। শেখ হাসিনা মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন।’
প্রকল্পের অন্যান্য উপকারভোগীরা জানান, এখানে উপহারের সঙ্গে পেয়েছেন মাছ চাষের জন্য পুকুর ও সবজি চাষের জন্য জমি। প্রত্যেক বাড়িতে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে পাকা টয়লেট।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় নদীভাঙা অসহায়, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। ঘরগুলো গুণগত মান বজায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা-উপজেলা প্রশাসন প্রত্যেক কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, ‘এ প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোল মডেল। কারণ এভাবে কোনো দেশে আশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ পাকা ঘর তৈরি করা হয়নি। যা একমাত্র বাংলাদেশেই হয়েছে। আমরা বরাদ্দ অনুযায়ী কাজের গুণগত মান বজায় রেখে টেকসই ঘর তৈরি করেছি। তৈরি ঘরগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় দরিদ্র ও নদীভাঙা গৃহহীনদের স্বচ্ছ তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের মাঝে বরাদ্দ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন একটি ভালো কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’