লক্ষ্মীপুরে স্বামী-শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে স্বামী-শ্বাশুড়ি-ননদের মারধরসহ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শারমিন আক্তার নুপুর (১৯) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের ভাই রাকিব হোসেন রায়হানের অভিযোগ, ফার্ণিচারের জন্য স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটনসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যার পর নুপুরের মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। এরআগে পালক মেয়ে জানতে পেরে তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। ঘটনার পর নুপুরের ৮ মাস বয়সী সন্তান আবদুল তাকরিমকে নিয়ে সবাই পালিয়ে গেছেন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরআগে সকাল ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই শ্বশুর আবুল হোসেন, স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটন, শ্বাশুড়ি বাসুরা বেগম, ননদ নয়ন বেগম, কাজল রেখা ও পারভিন আক্তার পলাতক রয়েছে।

নুপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের পূর্ব জামিরতলী গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে। ২০২২ সালের রমজানের দুইদিন আগে দত্তপাড়ার করইতলা গ্রামের ওমান প্রবাসী লিটনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়।

নিহতের ভাই রাকিব হোসেন রায়হান জানায়, তারা ৫ ভাই, কোন বোন ছিল না। এতে দুধের শিশু নুপুরকে তার বাবা-মা পালক নেয়। নুপুরের জাতীয় পরিচয়পত্রেও তাদের বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা একই। নুপুরকে কখনো তারা পালক হিসেবে ভাবেনি। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ির লোকজন নুপুর যে পালক মেয়ে সেটি জানতে পারে। এরপর থেকে তারা প্রায়ই মারধর করতো।

রাকিব হোসেন রায়হান বলেন, বুধবার সকাল ৭ টার দিকে নুপুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ফার্ণিচারের জন্য লিটন, তার মা বাসুরা বেগম ও বোন পারভিন আক্তার আমার বোনকে মারধর করেছে। ঘটনাটি জানতে পেরে লিটনের সঙ্গে কথা বললে আমাকে তিনি গালমন্দ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই শুনি আমার বোন আর নেই। বোনকে মেরে ঝুলিয়ে রেখে তারা পালিয়ে গেছে।

ঘটনার পর থেকে স্বামী মোহাম্মদ উল্যা লিটনসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে। এতে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম কামাল উদ্দিন বলেন, বাবা-মায়ের আপন মেয়ে না হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই নুপুরের ওপর স্বামী-শ্বাশুড়ি ও ননদরা নির্যাতন চালিয়েছে বলে শুনেছি। ইউপি সদস্যসহ আশপাশের লোকজনও তা জানিয়েছে। এরআগে মারধরের ঘটনা ইউপি সদস্যকে জানালে নুপুরকে স্বামীসহ অন্যরা মারধর করে, ঘটনাটি আমাকেও জানিয়েছিল।

তিনি আরও জানান, নুপুরে লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। তার এক পা খাটের বাইরে, অন্য পা খাটের ওপরে ছিল। দরজা আটকানো থাকলেও জানালার একটি কাঁচ ভাঙা ছিল।

দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, দরজা ভেঙে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন