নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে শ্রেণিকক্ষে অমনোযোগী থাকায় শিশুছাত্র আরাফাত রহমান রিশাদকে (৮) পিটিয়ে রক্তাক্ত জখমের অভিযোগ উঠেছে বেলাল হোসেন নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তার পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর হাসপাতালে আহত শিশু রিশাদকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
রিশাদের মা পারভিন আক্তার ও ফুফা আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত বেলাল সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড়আউলিয়া দারুস সুন্নাহ নুরানি হাফিজিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক। আহত রিশাদ দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড় আউলিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আরিফুর রহমানের ছেলে।
রিশাদের মা পারভিন আক্তার জানান, রিশাদ মাদরাসাটির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে মাদরাসায় যায় সে। সেখান থেকে দুপুর ১টার দিকে বাড়িতে ফেরে। পরে বিকেল ৩টার দিকে মাদরাসাতেই কোচিংয়ের জন্য যায়। সেখান থেকে রাত ৯টার দিকে বাড়ি ফেরে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রতিদিনের মতো রিশাদ মাদরাসায় যায়। তখন তাকে মাদরাসার বড় হুজুর বেলাল বেত্রাঘাত করেন। কিন্তু বাড়িতে এসে সে কাউকে কিছু বলেনি। বিকেলে কোচিংয়ে গিয়ে আবার রাতে বাড়ি ফেরে। তখন তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে বড় ভাই রাফি। এরপরও বেত্রাঘাতের ঘটনাটি কেন ঘটেছে তা জানায়নি রিশাদ। বৃহস্পতিবার ভোরে বেলাল হুজুর বাড়িতে এসে জানিয়েছেন ক্লাসে অন্যমনস্ক ও অন্যদিকে তাকিয়ে থাকায় রিশাদকে বেত্রাঘাত করা হয়। এরপর তিনি চলে যান।
রিশাদের ফুফা আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, শিক্ষক বেলালের বেত্রাঘাতে রিশাদের পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে। ব্যাথায় তার জ্বর চলে এসেছে। তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক বেলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি আলমগীর হোসেন আলম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। শিক্ষক বেলালকে মৌখিকভাবে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বেলালও সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে নোয়াখালীর মাইজদীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরলে ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক বেলাল হোসেনের মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষেদর ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) একেএম তারেক রহমান রনি বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। তাদেরকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।