‘সরকারি চাল কি শেখ হাসিনার চাল’ লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ নেতার বিতর্কিত বয়ান!

নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ছাত্রলীগ নেতা ‘সরকারি বরাদ্দের চাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাল’ বলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাকসুদ মিজান চটেছেন। ছাত্রলীগ নেতার এ কথার প্রতিউত্তরে মিজান বলেন, সরকারি চাল কি শেখ হাসিনার চাল? এ-সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অডিও ক্লিপটি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। গত ২২ আগস্ট উপজেলার বড়খেড়ি ইউনিয়নের মাহমুদা উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন বিজয়কে উদ্দেশ করে কথাগুলো বলেন আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাকসুদ।

হাসান মাকসুদ মিজান রামগতি উপজেলার বড়খেড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

অডিও বক্তব্যে শোনা যায়, ইউনিয়ন ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে বিজয় সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন। তবে চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নেতা হলেও তাকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন না বলে এ কর্মী অভিযোগ করেন।

একপর্যায়ে বিজয় চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে বলে ওঠেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করেও কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। আপনারা যাদের সুযোগ-সুবিধা দেন তারাই মিছিলের সামনে থাকে। তারা মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া চালের বস্তা নিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রীর নামেই খারাপ খারাপ কথা বলে। এমন লোক সহযোগিতা পেলেও আমি পাচ্ছি না। আমারে একটা কার্ড দিলে কি আমি খেয়ে ফেলবো? আমি তো আশপাশের লোকজনকে সহযোগিতা করতে পারি।’

তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান হাসান মাকসুদকে বলতে শোনা যায়, শেখ হাসিনা কি নিষেধ করেছে কাউকে চাল দিতে? কোনটা শেখ হাসিনার চাল? আরমান বলে ওঠেন, সরকারি চাল। তখন মিজান বলেন, সরকারি চাল কি শেখ হাসিনার চাল? আরমান তোমার বয়স যখন ৬ বছর, তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগের দুঃসময় বা খারাপ সময় দেখেছো? জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগের সুসময় দেখছো। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা আর ক্ষমতা। আমি বড়খেড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এখানে আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে নানান প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। পরিষদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। পরিষদ আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াতসহ সব নাগরিকের। এখানে সবাই সুযোগ পাবে। তুমি (ছাত্রলীগ নেতা) কেন পরিষদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছো? আমার বিরুদ্ধে তোমার অভিযোগ থাকতে পারে। তুমি আমার বিরুদ্ধে লিখতে পারতে। পরিষদের বিরুদ্ধে লেখা তোমার উচিত হয়নি। তোমার কোনো কিছু প্রয়োজন হলে আমিসহ অন্যান্যদের বলতে পারতে। ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ তোমাকে লিজ দেওয়া হয়নি। তুমি যদি একটি ইউনিটের নেতা হয়ে কেন্দ্রীয় নেতার মতো লেখালেখি করো তা তো হবে না। এ অধিকার তো তোমাকে কেউ দেয়নি।’

এ বিষয়ে মাহমুদা উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন বিজয় বলেন, ‘আমি দলের পক্ষে কিছু কথা বলেছি। এজন্যই চেয়ারম্যান আমাকে এসব কথা বলেছেন। তবে অডিও রেকর্ডিংটি কে করেছেন তা জানা নেই।’

জানতে চাইলে বড়খেড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাকসুদ মিজান বলেন, ‘একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক হয়ে এ ধরনের কোনো কথাই আমি বলতে পারি না। এ ঘটনা আমার মনে পড়ছে না।’

রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি শুনিনি।

আরও পড়ুন