নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশব্যাপী অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে প্রকাশ্যেই চলছে ফসলি জমিতে ড্রেজার বসানোর প্রস্তুতি। এমনটাই দেখা মিলেছে উপজেলার লামচর ইউনিয়নের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের চাড়াল বাড়ীর পশ্চিম পাশেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে আশেপাশে থাকা ফসলি জমিগুলো। ড্রেজারে বালি উত্তোলন করলেই ফসলি জমিগুলো ধেবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, প্রকাশ্যেই ফসলি জমিতে শ্রমিক দিয়ে চলছে ড্রেজার মেশিন বসানোর মহোৎসব। স্থানীয় পানপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ, চাড়াল বাড়ির শহীদ উল্লাহ ছেলে সুমন হোসেন সহ ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ নিজস্ব ড্রেজার মেশিন বসানোর জন্য শ্রমিক দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করেছেন।
স্থানীয় নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানান, ড্রেজারের কারনে আমাদের ফসলি জমিগুলো হুমকির মুখে পড়বে। আমরা কেউই চাইনা এখানে ড্রেজার চলুক৷ তাই ড্রেজার বন্ধে আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয় বসবাসকারী মনির হোসেন, জাহিদ হোসেন, রফিকউল্লাহ ও ইমরান হোসেন জানান, ফসলি জমিতে ড্রেজার মেশিনের বিষয়টি গণস্বাক্ষর করে চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। এভাবে অবৈধ ড্রেজার মেশিন চললে আগামীতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। তাই কৃষকদের স্বার্থে ড্রেজার বন্ধের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ড্রেজার মালিক হারুনুর রশিদ জানান, আমরা আমাদের জমি থেকে গ্রামের একটি মসজিদ নির্মানের জন্য ড্রেজারের মাধ্যমে বালি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয় সামাজিক উদ্দেশ্যেই এই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে ড্রেজার বন্ধ রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সকলকে ম্যানেজ করে ড্রেজার চালানোর কথাও জানান তিনি।
এসময় ড্রেজার তত্বাবধায়ক সুমন হোসেন সাংবাদিকদের সাথে উত্তেজিত হয়ে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আপনাদেরকে এখানে কে পাঠিয়েছে? ড্রেজার কাজ শুরু হলে তখন তথ্য জানাবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউছুপ হোসেন বলেন, ড্রেজারের বিষয়টি অবগত হওয়ার সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে এসে চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। চেয়ারম্যান বলেছেন এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ উল্যাহ জিসান বলেন, এলাকার একাধিক ব্যক্তি ড্রেজারের বিষয়টি জানালে আমি তাৎক্ষণিক ড্রেজার বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমানে তারা যদি আবার কাজ শুরু করে তাহলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন ইসলাম জানান, ড্রেজার মেশিন বসানোর বিষয়টির ব্যপারে খোঁজ খবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।