লক্ষ্মীপুরে অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন মোল্লাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগটি রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআর হিসেবে রুজু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে অটোরিকশা চালক রতন কবিরাজের অভিযোগের ভিত্তিতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতের বিচারক বেলায়েত হোসেন এ নির্দেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী এ টি এম জাকির হোসেন মঞ্জু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত রতনের অভিযোগটি আমলে নিয়ে এফআইআর করতে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদী রতন রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মৃত সামছুল হক কবিরাজের ছেলে।
অভিযুক্ত মনির দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। অপর অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন গাজী তার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভূমিহীন হওয়ায় আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রতন ও তার স্ত্রী রিনা বেগমকে সরকার চরকাছিয়া মৌজায় ৬০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেয়। কিন্তু ওই জমি তারা এখনো দখলে নিতে পারেনি। জমিটি আওয়ামী লীগ নেতা মনির জোরপূর্বক দখলে করে রেখেছে। রতন জমি বুঝে পেতে একাধিকবার মনির মোল্লার কাছে যান। কিন্তু উল্টো মনির তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। আর জমি ভোগদখলে বুঝে পেতে হলে ২ লাখ টাকা দিতে বলেন তাকে। এর জের ধরেই গত ১৯ জুলাই দুপুরে রতনের ছেলে শরিফ হোসেন কবিরাজ রিকশায় যাত্রী নিয়ে স্থানীয় মোল্লারহাট বাজারে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা মনির ও তার সহযোগী মহিন অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে রিকশাটি ভাঙচুর ও ব্যাটারি নিয়ে গিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি করেন। এ সময় রতনের ছেলেকেও মারধর করা হয়। ঘটনাটি জানতে পেরে রতন ঘটনাস্থলে আসলে তাকে আটক করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন মনির। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে রতন তাদের হাত থেকে ছাড়া পান। এ নিয়ে রতন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রতনকে হত্যার হুমকি দেন।
বাদী রতন কবিরাজ বলেন, অভিযুক্তরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। তারা প্রভাবশালী। আমি এখন পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন মোল্লা বলেন, অটোরিকশাটি কেনার সময় রতন আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নিয়েছে। এজন্যই আমি তার অটোরিকশা আটকে রেখেছি। জমি দখলে নিতে গাড়ি আটক, চাঁদা দাবির অভিযোগ সত্য নয়। রাজনৈতিক কারণে কেউ তাকে দিয়ে মামলা করাতে পারেন।
সন্ধ্যায় রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, আদালতের আদেশের কপি এখনও হাতে এসে পৌঁছেনি। আদেশ পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।