ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করেছেন ইউরোপের অন্তত ৩টি দেশের হাজার হাজার মানুষ। এই দেশগুলো হলো নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড।
রোববার ফিলিস্তিনের স্বাধনিতা ও সেখানকার জনগণের পক্ষে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মিছিলটি হয়েছে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন আমস্টারডামের মিছিলে। সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হামাসের পতাকা বহন, পুলিশেল ওপর হামলার চেষ্টা ও মুখ ঢেকে পদযাত্রায় অংশ নেওয়ায় মিছিল থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আমস্টারডাম পুলিশ।
তার আগের দিন শনিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিবিসির মূল কার্যালয় থেকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০, ডাউনিং স্ট্রিট পর্যন্ত মিছিল করেছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। চলমান এই যুদ্ধে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল না হওয়ায় কয়েকজন ক্ষুব্ধ মিছিলকারী বিবিসির মূল ফটক ও তার আশপাশের দেওয়ালে এলোমেলোভাবে ইচ্ছেমতো লাল রং ছিটিয়েছেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
শনিবার একই দাবিতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ৬ হাজার এবং রাজধানী বার্নে ৫০০ জন মানুষ মিছিল করেছেন। সুইজারল্যান্ডের টেলিভিশন চ্যানেল আরটিএস জানিয়েছে, মিছিলের পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী লোকজনকে ইসরায়েলি সরকারের বর্ণবাদী নীতি, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের দায়মুক্তি এবং যুদ্ধের জেরে গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।
প্রায় দুই বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর ভোররাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে হামাস এবং সূর্যের আলো ফোটার আগেই ইসরায়েলের দক্ষিণাংশের সীমান্ত বেড়া বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ওই ভূখণ্ডে প্রবেশ করে শত শত সশস্ত্র হামাস যোদ্ধা।
হামাসের হামলায় প্রথম দিনই ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন কয়েকশ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এছাড়াও দেড় শতাধিক মানুষকে এদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গেছে হামাস। এই জিম্মিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে— তা এখনও অজানা।
প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে হামলার শুরুর দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা কাটিয়ে পূর্ণ শক্তিতে যুদ্ধের ময়দানে নামে ইসরায়েল এবং প্রথম দিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, এই যুদ্ধ শুরুর দিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করেছে ইসরায়েল, সেই সঙ্গে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় আসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে লাখ লাখ মানুষ অধ্যুষিত এই উপত্যকায়।