লক্ষ্মীপুরে আদালতের নির্দেশ অমান্য, বিএনপি নেতার ‘পাহারায়’ স্থাপনা নির্মাণ!

নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে এক বিএনপি নেতাকে ‘পাহারায় বসিয়ে’ বিরোধীয় জমিতে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বাঞ্চানগর এলাকায়।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। এরআগে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

 

অভিযুক্তরা হলেন মাসুদ আলম, সুমন পাটওয়ারী, আবুল খায়ের, শাহাব উদ্দিন, আলম ওরফে কসাই আলম, আবদুর রহমান মোহন ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর লোকমান হোসেন। তারা বাঞ্চানগর ও পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কামাল উদ্দিন পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকার বাসিন্দা। একই এলাকায় সফি উদ্দিন রেজা মাহমুদের ওয়ারিশ হিসেবে বাঞ্চানগর মৌজায় এসএ জরিপের ৬০৭ নম্বর খতিয়ানে ২২৩২ দাগে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ১০ শতাংশ জমির মালিক হন। কিন্তু জমিটি দখলে নিতে তাজুল ইসলামরা বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা শুরু করেন। এতে সফি উদ্দিন ২০১৩ সালে তাজুলের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা করেন। এরমধ্যেই তাজুলের ওয়ারিশদের কাছ থেকে জমি কেনেন অভিযুক্ত মাসুদ।

 

সম্প্রতি মাসুদ ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে বাধা দেওয়ায় বাদী কামালদের সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিরোধীয় জমিতে স্থাপনা নির্মাণ ও মাটি কাটা বন্ধে লক্ষ্মীপুর আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। এতে আদালত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ৪ অক্টোবর মাসুদ ফের কাজ শুরু করেন। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক লোকমান হোসেনসহ অন্য অভিযুক্তদের পাহারায় বসিয়ে কাজ চলমান রেখেছেন মাসুদ।

বাদী কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘জমির বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মাসুদ ভাড়াটে লোকজনকে পাহারায় বসিয়ে জোরপূর্বক কাজ করাচ্ছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’

তবে মাসুদ আলম ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা দাবি করে বলেন, ‘জমির মালিকানার সব কাগজপত্র আছে। বাদী অহেতুক আমাদের হয়রানি করছেন। আদালত ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, পরে তা খারিজ হয়ে গেছে। আর স্থিতাবস্থার আদেশে কাজ বন্ধ রাখা যায় না।’

বিএনপি নেতা লোকমান হোসেন বলেন, ‘জমি নিয়ে প্রায় ১০ বার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকগুলোতে আমি মাসুদের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু কামালরা তাদের মালিকানার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। থানায় অভিযোগ দিয়েও লাভ হবে না। তাদের অভিযোগও মিথ্যা।’

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযুক্তদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। কিন্তু তারা কাজ চলমান রেখেছেন। এতে বাদীপক্ষকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন