তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৪ সালে বিএনপি গাড়ি ও মানুষ পুঁড়িয়েছিল। এতকিছু করেও তারা শেখ হাসিনাকে হটাতে পারেনি। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এ বিষয়ে আমরা খুবই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ দৃঢ়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। আশা করব বিএনপিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করবে।
তিনি বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ জানাই আগামী ১০০ দিন দেশকে পাহারা দিতে হবে। কারণ দেশটাকে তারা বিশ্ব বেনিয়াদের কাছে তুলে দিতে চাচ্ছে। ক্ষমতা পাহারা দিতে হবে না, ক্ষমতা পাহারা দেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের। কিন্তু দেশটাকে পাহারা দিতে হবে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা ভেবেছে ঢাকা শহরে কয়েকটা সমাবেশ করে, মানববন্ধন করে এবং সারাদেশ থেকে তাদের অগ্নিসন্ত্রাসীদের জড়ো করে সরকার হটিয়ে দেবে। এটা আওয়ামী লীগ সরকার… শেখ হাসিনার সরকার। কয়েকটা মানববন্ধন করে, নয়া পল্টনে ২০-৩০ হাজার মানুষ জড়ো করে কিংবা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে এই সরকার হটানো সম্ভব না। আপনারা ২০১৩-১৪ সালেও তো অনেক চেষ্টা করেছিলেন। বহু গাড়ি ও মানুষ পুড়িয়েছিলেন; তবুও শেখ হাসিনাকে হটাতে পারেননি।
তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয়। তারা জানে নির্বাচন হলেও তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। তারা যে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে সেখানে মাছ তারা শিকার করতে পারবে না, শিকার করবে অন্যরা। সেটিও তারা জানে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এবং বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে দেশটাকে তুলে দেয়া ও দেশের সম্পদটাও তুলে দেয়া।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বিএনপি-জামায়াত যখন নির্বাচনে আসে তখন তারা ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করে। জামায়াততো ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করে। কিন্তু ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ মারা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মুখে এখন একটিও কথা নেই।
মন্ত্রী বলেন, আর তারেক জিয়া নির্দেশ দেয় এটি নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ বিশ্ব মোড়লরা অখুশি হতে পারে। এজন্য তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলেন না। যারা বিশ্ব মোড়লরা অখুশি হবে বলে একটি শব্দ উচ্চারণ করেন না, তারা সুযোগ পেলে দেশটাকে বিক্রি করে দেবে।
তিনি বলেন, আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করার জন্য। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। আশা করি বিএনপিও সেখানে অংশগ্রহণ করবে এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করবে।
বিএনপি মহাসচিবকে ভদ্রলোক সম্বোধন করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল আর যাই হোক, মিথ্যা কথা বললেও, যেটা বিশ্বাস করে না সেটি মুখে বললেও এবং নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বললেও তিনি ভদ্রলোক। তাই তাকে বলব অত উঁচু গলায় কথা বলবেন না। আপনি এমপি হওয়ার পরও আপনার দল আপনাকে শপথ নিতে দেয়নি। আপনার দল এমপিদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদেরকে পদত্যাগ করিয়েছে, তবুও কোনো লাভ হয়নি। সুতরাং আপনার দলের মূল নেতারা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া চায় না আপনারা নির্বাচনে এসে ভালো ফল করুন কিংবা এমপি হোন। সুতরাং ফখরুল সাহেবদের অনুরোধ জানাব, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হয়ে কাজ করবেন না। রাজনীতিবিদ হিসেবে এবং দেশের স্বার্থে কাজ করুন। তাহলে দেশ উপকৃত হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র অরুন সরকার রানা এবং যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষসহ অনেকে।