প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন হবে এবং যথাসময় হবে। কারাও চোখ রাঙানিতে নির্বাচন থেমে থাকবে না। বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে, তা না হলে তাদের এজন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগদান উপলক্ষে সম্প্রতি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তিনদিনের সরকারি সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করছেন প্রধানমন্ত্রী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে মিয়ান আরাফি নামে এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে যান চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। এসময় সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ওই ব্যক্তি। এসময় ওই ব্যক্তি ভিসানীতির ব্যাপারেও কথা বলেছেন— এ বিষয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী তো সব সত্য বলে দিয়েছেন। আর চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, হচ্ছে।
বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে অপর এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুনিদের সঙ্গে কীসের বৈঠক?
বিএনপি একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, এরা (বিএনপি) আসলে নির্বাচনই চায় না। আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, মাঝখানে কিছুদিন বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচি করছিলেন এবং আপনারা নিশ্চয়ই বিশেষভাবে লক্ষ্য করেছিলেন আমাদের সরকার কিন্তু তাদের কোনো বাধা দেয়নি। তাদের ওপর একটা শর্ত ছিল, তারা অগ্নিসংযোগ বা ভাঙচুর করবে না।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) যখন সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল তাতে কিন্তু মানুষের একটু আস্থা-বিশ্বাসও তারা ধীরে ধীরে অর্জন করতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২৮ তারিখ বিএনপি যেসব ঘটনা ঘটালো, বিশেষ করে যেভাবে পুলিশকে হত্যা করেছে, মাটিতে ফেলে যেভাবে কোপালো, সাংবাদিকদের যেভাবে পেটালো, এ ঘটনার পর জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির কিছুই জুটবে না।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালে ঢুকেও তারা হামলা করেছে। সেখানেও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনে হাসপাতালে হামলা করছে, নারী-শিশুদের হত্যা করছে, এর সঙ্গে তো বিএনপির হামলার কোনো তফাৎ দেখি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’ সম্মেলনে যোগদান শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন।
বিদেশ সফর শেষে প্রতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন সরকারপ্রধান। সবশেষ গত ৬ অক্টোবর তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতে জি টোয়েন্টি সম্মেলন এবং জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও সংবাদ সম্মেলনে এলেন প্রধানমন্ত্রী।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান শেখ হাসিনা। বেলজিয়ামে পৌঁছানোর পর ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি।