ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকারে আজই নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে৷ গণআন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের ৭২ ঘণ্টা পরে নতুন সরকার দায়িত্বভার নিতে যাচ্ছে৷ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার প্রধান হচ্ছেন সেই সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে৷ তবে তার সঙ্গে এই সরকারের অন্য সদস্য কারা হচ্ছেন সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি৷ এই সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে, কী ধরনের কার্যপরিধি থাকবে সেসব বিষয়ও এখনও পরিষ্কার নয়৷
অলিম্পিক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় প্যারিসে অবস্থানরত ইউনূস গতকালই বাংলাদেশের পথে রওনা দিয়ে আজ ঢাকায় পৌঁছান৷ বিমানবন্দরে বেলা পৌনে তিনটার দিকে বক্তব্য দেন ড. ইউনূস। বক্তব্যের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করেন তিনি৷ রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন৷
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন আপনারা যদি আমার উপরে বিশ্বাস রাখেন, আমার উপরে ভরসা রাখেন, তাহলে নিশ্চিত করেন দেশের কোনো জায়গায় কারো উপরে হামলা হবে না৷ এটা আমাদের প্রথম দায়িত্ব৷ এটা যদি আমি করতে না পারি, আমার কথা যদি না শোনেন আপনারা তাহলে আমার প্রয়োজন এখানে নাই৷ আমাকে বিদায় দেন৷ আমি আমার কাজে থাকি, সেখানেই ব্যস্ত থাকি৷ মানুষ মনে করে সরকার দমন পীড়নের যন্ত্র৷ এটা সরকার হতে পারে না৷ সরকারকে মানুষকে রক্ষা করবে৷ আস্থাভাজন হতে হবে৷ মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে হবে৷ সবাই মিলে অগ্রসর হতে হবে৷ সারা বাংলাদেশ পরিবার হিসেবে চলবে৷’দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চলছে বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস৷ তবে এগুলোকে ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আখ্যা দেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব৷ যেই যাত্রার শত্রু এগুলো৷ এই শত্রুকে রোধ করতে হবে৷’
ইউনূস দেশবাসী, তরুণ আন্দোলনকারী এবং সেনাবাহিনীকে অবিলম্বে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করেন৷ বাংলাদেশ সুন্দর, সম্ভাবনাময় দেশ৷ সেটা আমরা নষ্ট করে ফেলেছি৷ সেটা নতুন করে আমাদে গড়তে হবে৷’
তরুণদের প্রশংসা করে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার অর্থ হলো, দেশ তোমাদের হাতে। তোমাদের মনের মতো করে গড়তে পারো৷ পালটে ফেলতে পারো৷ পুরনোদের বাদ দাও। তোমাদের মধ্যে সৃজশীলতা আছে, তাকে কাজে লাগাও৷’