রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২৮ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকালে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।
শরীফুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশ ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার সকাল ছয়টা থেকে বিএনপি ও জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় এ কর্মসূচি শেষ হবে।
এ অবরোধ শুরুর আগেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২ ঘণ্টায় অন্তত ১০টি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়েও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল এ তথ্য জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথমদিন শনিবার রাত থেকে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৯টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে কককেট নিক্ষেপ ও কিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
রোববার ভোরে ডেমরার মাতুয়াইলে সাদ্দাম মার্কেটের সামনে ও শ্যামপুরের জুরাইন বালুর মাঠ এলাকায় দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এরপর ভোর সোয়া ৫টায় মিরপুর-৬ নম্বরে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পরে সকালে মেরাদিয়ার বাঁশপট্টি এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ওই বাসের যাত্রী সবুজ মিয়া (৩০) দগ্ধ হন। সবুজ মিয়া পেশায় বাসচালক।
রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৈতালী নামে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। যদিও ওই আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নেভানো সম্ভব হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে।
একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলামোটর মোড়ে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়। বাংলামোটর পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এর আধাঘণ্টা পর মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর এলাকায় শিকড় পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ দুটি ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভায়।
এদিকে রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর পলাশী মোড়ে একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই প্রাইভেটকারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে রাখা ছিল। এছাড়া একই সময়ে কারওয়ান বাজারে একটি পিকআপভ্যানে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পিকআপের পেছনে থাকা সোফায় আগুন লাগে। পিকআপটি ওই সোফা ফেলে দিয়ে চলে যায়।
এছাড়া রোববার ভোরে চট্টগ্রামে পতেঙ্গার ধুমপাড়া মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সড়কের পাশে বাসটি রেখে চালক নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। হঠাৎ অটোরিকশায় চড়ে দুইজন লোক এসে বাসটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানা গেছে।
সকাল ১০টার দিকে হবিগঞ্জ চুনারুঘাটে উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি কবির মিয়া খন্দকারের প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই প্রাইভেটকারে কয়েকজন যুবক পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন আগুন নেভান।
এদিন খুলনার রূপসা উপজেলার তালিমপুর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।