গত ৩-৪ বছর ধরে প্রকাশ্যে খুন, মারামারি, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে অস্থির লক্ষ্মীপুর পৌর শহর। নিরাপত্তা ও অপরাধী শনাক্তে শহরে কয়েক দফায় কিছু সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলেও দেখভালের অভাবে অকেজো তিন-চতুর্থাংশই। ফলে মিলছে না কাঙ্খিত সুফল এবার জেলার পৌর শহর ও মহাসড়কসহ ২৫ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ সূত্র বলছে, ২০২৪ সালে অক্টোবর মাসে জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন ব্যক্তির সহযোগিতায় জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ২৫০ টি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সে সময় শহরের ঐতিহ্যবাহী দালাল বাজার, সরকারি কলেজ, নিউমার্কেট, ডাকবাংলো মোড়, মহাসড়কের ৯ কিলোমিটার, বাগবাড়ি মোড়সহ অন্ত্যত ৫০ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৩ টি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গোয়েন্দা শাখায় স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এসব সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন পুলিশ। এর সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপারেশন হাসান মোস্তফা স্বপন জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিআইও১ একেএম আজিজুর রহমান বলেন, কোনো গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটালে বা অপরাধ করে পালানো চেষ্টা করে সিসি ক্যামেরা ওই গাড়ির নম্বর প্লেট ধারণ করে রাখবে। এতে সহজেই ওই গাড়ির মালিক, গাড়িসহ অপরাধীকে ধরা সম্ভব হবে। যার ফলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে তিনি বলেন, আপাতত মহাসড়কের ৯ কিলোমিটার এলাকা ও শহরে ২৬ কিলোমিটার এই সিসি ক্যামেরার আনা হলো। পরবর্তীকালে লক্ষ্মীপুর জেলার সব কটি উপজেলা শহরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার সকল থানা এলাকার আরও ১০ থেকে ১২টি স্থানে ৫০০টি ক্যামেরা স্থাপন করবে জেলা পুলিশ।দালাল বাজার এলাকার বাসিন্দা আলআমিন সিকদার বলেন, কয়েকদিন আগে খোয়াশার দিঘির পাড় থেকে লক্ষ্মীপুরে দিকে যাওয়ার পথে আমার আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রতারকরা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। সে সময় আমরা পুলিশে অভিযোগ করি।
শুধুমাত্র সড়কের পাশে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা থাকার কারণে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা আসামি শনাক্ত করতে পেরেছি। এখন শহরের প্রতিটি মোড়ে পুলিশের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় অপরাধীদের ধরা আরও সহজ হচ্ছে।
এছাড়াও বহির্বিশ্বের মতো লক্ষ্মীপুরও আধুনিক শহর হিসেবে পরিচিত পাবে। পুলিশ সুপার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই আমরা।
লক্ষ্মীপুর জেলার গোয়েন্দা শাখার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি আমরা দীর্ঘদিন থেকে আলোচনা করে আসছি। ইতিমধ্যে আমাদের পুলিশ সুপার স্যার শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৫০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার অপরাধীকে সাথে সাথে গ্রেফতার করতে পারছি আমরা।ক্যামেরা স্থাপন হওয়ায় চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং অপরাধের প্রবনতা অনেক কমে গেছে।লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ বলেন, সিসি ক্যামেরা বসানোর পর থেকে মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই হ্রাস পেয়েছে। ইতিমধ্যে সাতটি ঘটনা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে শহর ও মহাসড়ক মিলে ৩৫ কিলোমিটার এলাকার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ওলি-গলিতেও ক্যামেরা থাকবে। এতে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।