প্রতিনিধি :লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরে চরকাছিয়া ও চরইদ্রুরিয়া গ্রাম। পশ্চিম প্রান্তে নদীর চরে বসবাস করছেন দশ হাজার ভূমিহীন পরিবার। ১২০ পরিবারের জন্য রয়েছে আশ্রয়ণ ও আবাসন প্রকল্প। গ্রামে তথা সরকারি ১১৩টি স্কুলে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় সেখানে কলাগাছ দিয়ে শিশু- কিশোররা একটি শহীদ মিনার বানায়। এরপর বুধবার সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায় চরইদ্রুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০-৩০ শিশু।
শিশুরা জানিয়েছে, বুধবার সকালে মেঘনা নদীর তীরে চর ইন্দ্রুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কলাগাছ কেটে, তাতে কাগজ মুড়িয়ে শহীদ মিনারটি বানিয়েছে তারা।
এরপর সেখানে বালু দিয়ে তৈরি করে শহীদ বেদি। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বাড়াতে রশি টানিয়ে তাতে লাগানো হয় রঙিন কাগজ। গ্রাম ঘুরে সংগ্রহ করা হয় গাঁদা ফুল। বুধবার সকাল সাতটার মধ্যে সেখানে জড়ো হয় শিশুরা। এরপর সেখানে উপস্থিত হন চরইন্দ্রুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জান্নাত বেগম ।
ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর শিশুদের ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও ইতিহাস বলেন প্রধান শিক্ষক ।
চরইদ্রুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সাবরীন আক্তার (৯) বলেন, ‘আমাদের গ্রামে শহীদ মিনার নেই। আমরা মেডামকে শহীদ মিনার তৈরির কথা জানালে তিনি আমাদের সহযোগিতা করেন। আমরা নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারে সবাই মিলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছি। খুব ভালো লেগেছে।’
কলাগাছ কেটে, তাতে কাগজ মুড়িয়ে শহীদ মিনারটি বানিয়েছে শিশুরা। এরপর সেখানে বালু দিয়ে তৈরি করে শহীদ বেদি। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বাড়াতে রশি টানিয়ে তাতে লাগানো হয় রঙিন কাগজকলাগাছ কেটে, তাতে কাগজ মুড়িয়ে শহীদ মিনারটি বানিয়েছে শিশুরা। এরপর সেখানে বালু দিয়ে তৈরি করে শহীদ বেদি।
শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বাড়াতে রশি টানিয়ে তাতে লাগানো হয় রঙিন কাগজ মুনিরা (১০) নামের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, শহীদ মিনারের জন্য কলাগাছ কাটা, বেদি তৈরি করা, মিনার প্রাঙ্গণ সাজানো—সব কাজ শিশুরা করেছে। মেডাম জান্নাত বেগম কাগজ, আটা ও দড়ি কিনে দিয়েছেন। এই প্রথম সে শহীদ মিনার বানিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। খুব ভালো লেগেছে তার।
চরইদ্রুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জান্নাত বেগম বলেন, মেঘনা নদীর আশপাশে আমাদের মত ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পুরো উপজেলায় ১১৩টি বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। এখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে গন্ধর্ব জয়নালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। আমার স্কুলের শিশুরা শহীদ মিনার তৈরির কথা জানালে তিনি সব সহযোগিতা করেন। পাশাপাশি শিশুদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেন। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সকল (১১৩টি) স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করার দাবি জানান।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন বলেন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণের কথা ভাবছেন জেলা প্রশাসক। সেটি বাস্তবায়িত হলে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।