নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের বাড়িতে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে। এসময় শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার, বাসার জানালার কাঁচ ভাঙচুর ও সিসি ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়েছে হামলাকারীরা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব করপাড়া গ্রামের সেলিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে এলডিপি ও বিএনপি জোটগত কোন্দলের কারণে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
করপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেনের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন লোক মোটরসাইকেলযোগে এসে এ হামলা করেন বলে এলডিপি নেতা সেলিম অভিযোগ করেন। সেলিম বলেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। এসময় আওয়ামী লীগ নেতা তসলিমের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। বাসার জানালার কাঁচ ও শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এসময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল ৩ টার দিকে এলডিপি সেলিমের বাড়িতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এসময় হঠাৎ করে তসলিমসহ একটি মোটরসাইকেল বহর এসে অতর্কিত কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে বাসার সামনে থাকা শতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করে। পরে বাসার জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে হামলাকারীরা সিসি ক্যামেরা ভেঙে নিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপির উপজেলা ও পৌর কমিটি দেওয়া হয়। ওই কমিটি থেকে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৫ জনকে অবহ্যতি দেওয়া হয়। সেলিম ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে কথা বলায় পদ হারিয়েছে নাজিম উদ্দিনসহ ওই ৫ নেতা। এ কোন্দলের কারণেই সেলিমের বাড়িতে বিএনিপর পদ হারা নেতাদের লোকজন হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ রাজনীতি করে আসছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঠেকাতে বিকেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল করে। এখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সেলিমের বাড়িতে হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন লোকজন জড়িত নেই।
আওয়ামী লীগ নেতা তসলিম হোসেন বলেন, আমরা প্রতিবাদ মিছিল করেছি এলাকায়। সেলিমের বাড়িতে আমরা হামলা করিনি। জোটগত কোন্দালের কারণেই বিএনপি নেতা ভিপি রহিম ও সাহাবুদ্দিন তুর্কির লোকজন সেলিমের বাড়িতে হামলা করেছে। এখন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। এলাকায় যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।
লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত এসপি) সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কে বা কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কেন্দ্রীক লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে এমপি পদে বিএনপি থেকে এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম আলোচনায় রয়েছেন। গেল বছরের ৩০ অক্টোবর ঘোষিত রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি দেওয়া হয়। সেখানে সেলিমের লোকজনকেও পদপদবীতে রাখা হয়। এর বিরুদ্ধে সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নাজিম উদ্দিনসহ নেতারা আন্দোলন করে। এতে ২৮ নভেম্বর জেলা বিএনপি নাজিম উদ্দিনসহ ৫ নেতাকে বহিস্কার করে। এরআগে গত ৪ নভেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা সেলিমের বাড়িতে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
