যুবককে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে নির্যাতন, ইউপি সদস্য কারাগারে
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পুলিশ পরিচয়ে মো. সুমন নামের এক যুবককে তুলে নিয়ে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে পেটানোর মামলায় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের বর্ডার এলাকা থেকে রামগতি থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিকেলে তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
ভূক্তভোগী সুমন চর বাদাম ইউনিয়নের পূর্বচরসীতা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশারের ছেলে। পেশায় তিনি গাছ ব্যবসায়ী।
মামলা সূত্র জানায়, গত ৭ জুন সাড়ে ৭ টার দিকে সুমনদের এলাকা পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় দুটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে কয়েকজন লোক আসে। একপর্যায়ে মামলা আছে বলে তাঁরা পুলিশ পরিচয়ে সুমনকে তুলে নিয়ে যায়। পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ভুলুয়া নদীর পাশে ফিরোজ মিয়ার প্রকল্প এলাকার নির্জনস্থানে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে তিনি সবাইকে চিনতে পারেন। এসময় গাছের সঙ্গে দুই হাত বেঁধে তাঁর (সুমন) মোবাইলফোন থেকেই ইউপি সদস্য আবদুর রহিমকে কল দেয়া হয়। এরপর আবদুর রহিম এসে তাঁকে বিবস্ত্র করার নির্দেশ দেয়। একপর্যায়ে তাঁর শরীরে পিঁপড়া ছেড়ে এলোপাতাড়ি লাথি-ঘুষি মারতে থাকে। পরে মুখে কাঁদা ঢুকিয়ে দিলে বমি করেন। এসময় ফের মুখে লতাপাতা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে মুখমন্ডলে কালোকাপড় বেঁধে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তাঁরা। পরদিন সুমনের ভাই আবদুল মাজেদ রাজিব বাদী হয়ে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। এতে ইউপি সদস্য আবদুর রহিমসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অচেনা আরো ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়।
বাদীর আইনজীবী মো. ইয়াহিয়া সোহাগ জানান, মামলার পর আসামি আব্দুর রহিমসহ অন্যান্যরা উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নেন। পরবর্তীতে জামিনের মেয়াদ শেষ হলে গত ২৪ জুলাই আসামিদের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। অন্যান্য আসামিরা উপস্থিত হলেও আব্দুর রহিম উপস্থিত হননি। এতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে আদালত।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, অপহরণ মামলায় পলাতক আসামি আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।