পদ্মা লাইফের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তাকে লক্ষ্মীপুরের ১৮৬ গ্রাহকের নোটিস

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে মেয়াদ শেষ হলেও শত শত গ্রাহকের দাবী পরিশোধ করা নিয়ে টালবাহানা ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) হটলাইনে একাধিবার গ্রাহকেরা অভিযোগ দেওয়ার পরও সাড়া মিলছে না।
বছরের পর বছর মেয়াদ শেষ হলেও দাবী পরিশোধ না করায় এমডি নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়া, ডিএমডি হেফজুর রহমানসহ ৫ কর্মকর্তা কে লক্ষ্মীপুর থেকে ১৮৬ জন গ্রাহক উকিল নোটিস দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে উকিল নোটিস পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ বীমা দাবীর পরিশোধ করেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে পরিশোধ করার কথা বলে দিনের পর দিন প্রতিশ্রুতি দিয়ে হয়রানি ও প্রতারণা করে যাচ্ছে গ্রাহকদের পদ্মা লাইফ।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জজকোর্টের আইনজীবী এ্যাড: সোহেল মাহমুদ ৩২ জন, এ্যাড: মহসিন কবির মুরাদ ৭ জন এবং চাঁদমণি মোহন ১৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে সম্প্রতি পদ্মা লাইফের এমডি, ডিএমডি হেফজুর রহমান, নোয়াখালী ইনচার্জ নজরুল ইসলাম, লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের ইনচার্জ মুজিবুল হক ও একই কার্যালয়ের অবলিখন কাম ক্যাশিয়ার মোস্তফা কামালকে মোট ১৮৬ জন গ্রাহক পাওনা টাকা পরিশোধ করার জন্য উকিল নোটিস প্রদান করেছে। যা তথ্য আমাদের প্রতিবেদক সংগ্রহ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৫-৭ শতাধিক গ্রাহকের প্রায় ৫ কোটি টাকা মেয়াদ শেষেও পরিশোধ করছে না পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স।
সদর উপজেলার সদর উপজেলার গর্ন্ধব্যপুর গ্রামের সামছুল ইসলাম খান এর মেয়ে নিগার সুলতানা বলেন, তিনি ১০ মেয়াদে মাসিক ৫০০ টাকা করে ৬০.০০০ টাকা টাকা জমা দেয়। ২০২২ সালে তার বীমার মেয়াদ শেষ হলে।
একই এলাকার মৃত তোফায়েল আহমদ এর পুত্র মো: শাহজাহান বলেন, আমাদের ১ লাখ জমা হওয়ার পর প্রায় ২ বছর শেষ হতে চলেছে এখনো আমার টাকা দেননি কোম্পানীর লোকজন। তাদের লক্ষ্মীপুর ও মান্দারী অফিস বন্ধ রয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের মোবাইল বন্ধ ইতিমধ্যে কোম্পানী উকিল নোটিস দিয়েছে তবুও কোম্পানী টাকা দিচ্ছেনা এখন মামলা করার প্রস্ততি নিচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর জজকোর্টের আইনজীবী এ্যাড: সোহেল মাহমুদ ও মহসিন কবির মুরাদ বলেন পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কিছু গ্রাহকের পক্ষ থেকে কোম্পানীকে উকিল নোটিস করার পরও গ্রাহকের টাকা তারা দেয়নি বলে জেনেছি। এখন আমরা গ্রাহকের বলেছি আদালতে মামলা করার জন্য।
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একতা সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলায় বীমা কোম্পানীটির কার্যালয়ে গেলে দরজায় তালা ঝুলতে দেখা যায়। এসময় বাইরে কোম্পানীর নামে কোন সাইবোর্ড দেখা যায়নি।
তবে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অন্য একটি বীমা কোম্পানীর ম্যানেজার বলেন, পদ্মার কার্যালয় বাগবাড়ি এলাকায় ছিল। সেখান থেকে একতা সুপার মার্কেটে এসেছে। কিন্তু তাদের অফিস খুলতে কখনো দেখা যায়নি। দায়িত্বরত কর্মকর্তার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য জানা সাড়া পাওয়া যায়নি। একই কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স লি: (ডিএমডি) হেফজুর রহমান গ্রাহকের টাকা না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, লক্ষ্মীপুরের বেশ কিছু গ্রাহকের উকিল নোটিস আমরা পেয়েছি। কোম্পানী ফান্ডে টাকা না থাকার কারণে গ্রাহকের টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। ফান্ড পেলে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা হবে।

আরও পড়ুন