লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) জেলার পাঁচটি উপজেলায় বন্যার পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। নোয়াখালী থেকে আসা পানির চাপে এমন অবস্থায় দিশেহারা লাখো মানুষ। সম্পদের দিক থেকে মৎস্য খাতের ক্ষতি হয়েছে বেশি। প্রায় সব পুকুরের মাছই ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে জেলার মেঘনা নদীসহ খাল-বিলের পানি বেড়ে গেছে। এতে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। গ্রামের পর গ্রাম, মাঠের পর মাঠ পানিতে ডুবে আছে। দুর্ভোগে পড়েছে লাখো মানুষ।এদিকে টানা পাঁচ দিনের ভারী বর্ষণে লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৪০ হাজার পুকুর ডুবে চাষের প্রায় সব মাছ ভেসে গেছে। এতে জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, জেলায় চাষাবাদ করা প্রায় ৫৪ হাজার পুকুর আছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার পুকুর ডুবে ৯০ শতাংশ মাছ ভেসে গেছে। ৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির চাষের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্যচাষিদের প্রায় ৮০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, ‘নদীতে ভাটা এলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সব কটি স্লুইচ গেট খুলে দেয়া হয়। আবার জোয়ারের সময় গেটগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এখনো মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এক-দুই দিনের মধ্যে পানি ধীরে ধীরে কমতে পারে।’লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জেপি দেওয়ান জানান, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার পানি কমতে শুরু করলেও নোয়াখালী সদরের পানির চাপে লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণাঞ্চল, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছ । জেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার সবগুলোতে কমবেশী জলাবদ্ধতা হয়েছে । প্রায় ছয় লাখ ৫৭ হাজার লোক পানিবন্দি আছে।