ব্লক দিয়ে মেঘনার বাঁধ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলাকে রক্ষায় ব্লক দিয়ে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কমলনগর ও রামগতি বাঁচাও মঞ্চের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।

কমলগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কানার খাল এলাকায় ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেয়।

এসময় বক্তব্য রাখেন কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহবায়ক ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান, সংগঠনের সদস্য ইমরান হোসেন শাকিল, ওমর ফারুক ও আফজাল হোসেন অনিক প্রমুখ।

আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৩ কিলোমিটার বাধ নির্মাণ কাজের অনুমতি দিলেও এখনো পর্যন্ত ৫ শতাংশ কাজও হয়নি। তদারকি না থাকায় ঠিকাদাররা কোনমতে কাজ করছেন। এতে কানার খাল এলাকায় নদীর তীব্র স্রোতে মাটির বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে উপকূলে ভাঙন দেখা গেছে। পূর্ণিমার জোয়ারে কয়েক মাইল এলাকা প্লাবিত ছিল। ব্লক ছাড়া জিও ব্যাগ ডাম্পিং ও মাটির বাধ দিয়ে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়। এজন্য ব্লক দিয়ে দ্রুত বাধ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ৪ টি প্যাকেজে ১২৫০ মিটার কাজ পেয়েছেন মেসার্স এসএবি গ্রুপ। ইতিমধ্যে তারা জিওব্যাগ ডাম্পিং কাজ সম্পন্ন করেছে। তবে তাদের কার্জ এলাকা কানার খাল ভাঙনে এলাকাবাসী ঠিকাদারদেরকেই দায়ী করছেন।

আবুল কালাম ও আমির হোসেনসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান, বাধের পূর্ব পাশ থেকে ঠকাদীর প্রতিষ্ঠান মাটি কেটেছে। এতে জমির মালিকদের কোন টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি। ওই মাটি দিয়েই চলাচলের জন্য বাধ দেওয়া হয়। এতে জোয়ারের পানি ও প্রবল বৃষ্টিতে বাধটি ভেঙে ২-৩ টি ঘর ভেঙে গেছে। ৩ ধরে অনেকে পানিবন্দি ছিলেন। ভাতও রান্না করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে এসএবি গ্রুপের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা জিওব্যাগ ডাম্পিং শেষ করেছি। এখনো বাধের কাজ শুরু করিনি। অক্টোবরে বাধ নির্মাণ ও ব্লক স্থাপন কাজ শুরু করা হবে। ব্লক নির্মাণ কাজ চলছে। কানার খালসহ যেসব স্থানে ভাঙন রয়েছে তাও ঠিক করে দেওয়া হবে। ডিজাইন অনুযায়ী সংশ্লিষ এলাকার বাইরে থেকে কোন মাটি নেওয়া হয়নি। এতে কাউকে টাকা দেওয়ারও কথা নেই। এটি বাধ ছিলো না। মানুষ যেন চলাচল করতে পারে সেজন্য রাস্তা করে দেওয়া হয়েছিল।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, ১৩ কিলোমিটার এলাকায় বাধ নির্মাণের জন্য কাজের অনুমতি দেওয়া হয়। ২৮ লাখ এর মধ্যে এখনো পর্যন্ত ২০ লাখ জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। বুয়েট থেকে জিওব্যাগগুলোর মান নির্ণয়ের পর তা ব্যবহার করা হয়েছে। টাস্কপোর্স ব্যাগগুলো গুণে দেয়। এছাড়া প্রত্যেকটি বাধ নির্মাণ কাজের প্রত্যেকটি এলাকাতেই পাউবোর দায়িত্বরত লোকজন তদারকিতে থাকেন। নৌকা নোঙর ও বাগদা চিংড়ি শিকারীদের কারণেই জিওব্যাগগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রসঙ্গত, রামগতি ও কমলনগরে ৩১ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের জুন মাসে একনেকের সভায় ৩১শ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট এলাকায় এসে কাজের উদ্বোধন করেন। গত দেড় বছরে ১৩ কিলোমিটার বাধ নির্মাণ কাজের অনুমতি দিয়েছে পাউবো। এরমধ্যে কমলনগরে ৮ কিলোমিটার ও রামগতিতে ৫ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন