নিজস্ব সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তিনটি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নকল কমিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এরমধ্যে এক ইউনিয়নে পাল্টাপাল্টি কমিটি রয়েছে। মধ্যরাতে ফেসবুকে এ নকল কমিটি প্রচার করায় বিভ্রান্তিতে পড়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তারা এখন আসল কমিটির খোঁজ করছেন।
তবে উপজেলা ছাত্রলীগের পাঁচজন যুগ্ম আহ্বায়কই বলছেন, ফেসবুকের কমিটিগুলো ভুয়া। ওই কমিটিতে তারা একজনও সই করেননি। তাদের সই-সিল জাল করে ব্যবহার করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে এমনটি করা হতে পারে। আর এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরআবাবিল ও সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মীসভা হয়। এতে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নসহ জেলা ও উপজেলার সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে মধ্যরাতে ফেসবুকে এসব ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এরপরপরই ঘোষিত কমিটিতে নেতাদের অনুমোদনের সই জাল করা হয়েছে বলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে দুইটি পাল্টাপাল্টি কমিটি দেখা যায়। একটিতে হাবিবুর রহমান আরাফাতকে আহ্বায়ক, তালহা ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১৮ সদস্য করা হয়। অন্যটিতে, মো. তালহা ইসলামকে সভাপতি ও খায়রুল ইসলাম ইমনকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য করা হয়।
এছাড়া, দক্ষিণ চর আবাবিল ইউনিয়নে ফরহাদ হোসেনকে আহ্বায়ক, আরমান হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। সোনাপুর ইউনিয়নে মিস্টার হোসেন পাটওয়ারীকে সভাপতি ও মহিউদ্দিন ক্যানীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এসব কমিটিতে উপজেলা আহ্বায়ক পাপেল মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাউছার হোসেন, নুরনবী সুজন, ফখরুল আলম, হুমায়ুন কবির ও হাওলাদার মো. সুমনের সই রয়েছে। তবে সব যুগ্ম আহ্বায়করা বলছেন, তারা কেউ এসব কমিটিতে সই করেননি।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ছাত্রলীগকর্মী মো. পারভেজ বলেন, আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে দুইটি কমিটি দেখতে পেয়েছি। পরে শুনেছি দুইটিই ভুয়া। আমরা এখন আসল কমিটির খোঁজে আছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফখরুল আলম বলেন, টাকার বিনিময়ে আমাদের আহ্বায়ক পাপেল মাহমুদ গভীর রাতে ফেসবুকে ভুয়া কমিটি প্রচার করেন। তিনি ছাত্রলীগকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি সমালোচিত।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরনবী সুজন বলেন, তিনটির কোনোটিতেই আমরা কোনো যুগ্ম আহ্বায়ক সই করিনি। ভুয়া কমিটির কারণে নেতাকর্মীরা ধোঁয়াশার মধ্যে আছে।
ভুয়া কমিটি প্রকাশের বিষয়ে জানতে রায়পুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পাপেল মাহমুদের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, নানাভাবে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হলেও তা হয়নি। কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি করার দাবি জানান তিনি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কদের সই জাল করে কমিটি প্রচারের ঘটনাটি জেনেছি। এ নিয়ে তারাও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি বলেন, বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। ভুয়া কমিটি প্রচারের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।