নোয়াখালী হাতিয়ায় জাল জন্ম নিবন্ধন তৈরির সঙ্গে জড়িত হাবিবুর রহমান (২১) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
আটক হাবিবুর রহমান বুড়িরচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সে পেশায় একজন কম্পিউটার ও ফটোস্ট্যাট দোকানের মালিক।
জানা যায়, হাবিবের বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে একটি কম্পিউটার ও ফটোস্ট্যাট দোকান রয়েছে। এখান থেকে মানুষজন জন্ম ও মৃত্যু সনদের জন্য আবেদন করতেন। এই সুবাদে তার সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধন করা কর্মকর্তাদের সক্ষতা তৈরি হয়। এতে সে অর্থের বিনিময়ে জাল জন্মনিবন্ধন তৈরির কাজ শুরু করে।
সবশেষ একমাস আগে বুড়িরচর ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামের পারুল বেগম নামে একজনের জন্মনিবন্ধন করে দেন হাবিব। পারুল বেগম তার জন্মনিবন্ধন নিয়ে এসে নিজের সন্তানদের জন্মনিবন্ধন করার জন্য একটি আবেদন জমা দেন ইউনিয়ন পরিষদে। পরে যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় এটি একটি জাল জন্মনিবন্ধন। প্রিন্ট কপিতে চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের স্বাক্ষরও জাল। অনলাইনে দেখা যায় পারুলের জন্মনিবন্ধনে পাশের ইউনিয়ন নিঝুম দ্বীপের একটি ঠিকানা দেওয়া আছে। পরে পারুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাবিবকে ডেকে আনা হয় পরিষদে। একপর্যায়ে হাবিব এই জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অনেকে এসে তার কাছে জন্মনিবন্ধন করেছেন বলে চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিতে থাকেন। তাকে আটক করা হয়েছে শুনে রাতে অনেক লোক এসে পরিষদের সামনে ভিড় করেন। তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকীকে জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
বুড়িরচর ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, জাল জন্ম নিবন্ধন পাওয়ার পর সচিব পারুল বেগমে আমাকে ঘটনাটি জানায়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাবিবকে ডেকে আনা হয় পরিষদে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সংবাদ দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করে আসছে। অনেকে তাকে বিষয়টি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বলেছে। আজ প্রমাণসহ হাতে নাতে ধরা পড়েছে এই চক্রের এক সদস্য।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, হাবিব জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি পক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাকে ২০০৪ এর ২১ এর ১ ধারা মোতাবেক একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সে যে ইউনিয়নের আইডি ব্যবহার করে এই কাজ করেছেন তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি।