নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুবলীগ নেতা মো.রাসেল ওরফে শিশু রাসেলসহ ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতের দিকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১। এর আগে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে যুবলীগ নেতা শিশু রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বেগমগঞ্জের মাহবুল্লাপুর গ্রামের জাফর আহম্মদ ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কালা বাবু (২৬), একই উপজেলার দেবকালা গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে ফিরোজ আহম্মদ ওরফে রাকিব (২০) ও চাঁদকাশিমপুর গ্রামের মো.দেলোয়ারের ছেলে মো.রাসেল ওরফে শিশু রাসেল (২৭) ।
নিহত আব্দুল লতিফ মিন্টু (৪৫) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাহবুল্লাপুর গ্রামের খান বাড়ির মৃত আবু তাহেরের ছেলে এবং সে গোপালপুর ইউনিয়ন যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালের দিকে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কোটরামহব্বতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত যুবদল নেতা মিন্টুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে একই দিন রাত পৌনে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১ (সিপিসি-৩) নোয়াখালী কার্যালয়ের কোম্পানী কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে মিন্টু নামে এক যুবককে সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কোটরামহব্বতপুর গ্রামের রাস্তার ওপর ফেলে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে ভিকটিম মারা যান। তাৎক্ষণিক র্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর আভিযানিক দল হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর বিশেষ আভিযানিক দল ভোর রাতের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোপালপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ৭ জুলাই উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো.হাসিবুল বাশার হাসিবকে (২২) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি ছিল নিহত যুবদল নেতা মিন্টু। কিছু দিন আগে নতুন করে যুবলীগ নেতা শিশু রাসেলের সাথে বিরোধ বেধে যায় নিহত মিন্টুর। পূর্ব শক্রতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরের দিকে যুবলীগ নেতা রাসেলসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন মিন্টুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে উপজেলার কোটরামহব্বতপুর গ্রামে পেলে যায়। পরে স্থানীয় চৌকিদার বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে। পরে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ এলাকাবাসীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে একজনকে আটক করেছে। এলাকায় প্রভাব বিস্তার থাকায় কেউ মুখ খোলেনা। যার নাম পেয়েছি, সে সশরীরে ছিল, তাই তাকে আটক করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, নিহত মিন্টু ছাত্রলীগ নেতা হাসিব হত্যা মামলার জামিনপ্রাপ্ত ৫ নম্বর আসামি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।