বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে তার পরিবারের করা আবেদনে সাড়া দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। রোববার (১ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মতামত দেয়া হয়।
তবে বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর আগে দুপুরে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, আইনগতভাবে খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। আজই মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে ফাইল দেখে মতামত দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। কিছু সময় পরই আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মতামত দেয়া হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি প্রধানের পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে কারাবন্দি হন তিনি। পরে হাইকোর্টে সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। সবশেষ ১২ সেপ্টেম্বর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
কারাগার থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজার ওঠার পর বেশ কয়েকবার অসুস্থ হন বিএনপি প্রধান। কয়েকবার তাকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিসে ভুগছেন। এছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতাও রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
সর্বশেষ প্রায় দুই মাস আগে অসুস্থ হলে বিএনপি প্রধানকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সিসিইউতেও নেয়া হয়।
শারীরিক অবস্থায় বেশি খারাপ উল্লেখ করে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই আবেদন করেন। পরে মতামতের জন্য আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দুই দলের নেতাদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। গুঞ্জন রয়েছে, সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে পারে। গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, শর্তসাপেক্ষে বিদেশে যেতে দিতে চায় সরকার। তবে খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে বিদেশে যেতে রাজি নয়। এসব গুঞ্জনের মধ্যেই আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামত জানিয়ে দেয়।