আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া এবং চন্দনাইশ উপজেলায়। ৬ দিনে পানিতে ভেসে গিয়ে মারা গেছে ১৪ জন। এদিকে, পানি নামার পর স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষয়ক্ষতি। এ তিন উপজেলায় নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪৮ হাজার পরিবার।
আকস্মিক এ বন্যায় সবকিছু হারিয়ে শোকে স্তব্ধ, লোহাগাড়া উপজেলার সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ উক্তি বিশ্বাস। তার এই চোখের পানি বলে দিচ্ছে এবারের বন্যার ভয়াবহতা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পানিতে ভেসে যায় তাদের ঘর।
অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল থেকে সৃষ্ট বন্যায়, নষ্ট হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটেও মানবেতর জীবনযাপন করছে তিন উপজেলার বাসিন্দারা। ঘর থেকে পুরোপুরি পানি না নামায় ধর্মীয় উপাসনালয় ও আশ্রয়কেন্দ্রে দিন কাটছে অনেকের।
চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘর-বাড়ি ও আঙিনায় এখনও বন্যার পানি জমে আছে। মানুষ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ গবাদিপশুও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, সাতকানিয়া ১ লাখ ২০ হাজার, চন্দনাইশে ৪০ হাজার এবং লোহাগাড়ার ৩০ হাজারসহ সর্বমোট ১ লাখ ৯০ হাজার বসিন্দা বন্যায় পানিবন্দি ছিল। এদিকে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, দুর্গত এলাকায় শুকনো খাবার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া যাদের ক্ষয়ক্ষতি বেশি পরিমানে হয়েছে তাদের সাথে কথা বলে সাহায্য করা হবে।এছাড়া কয়েকদিনের মধ্যে পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
এদিকে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বলছে, রেকর্ডভাঙা বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে চট্টগ্রামের পরেই রয়েছে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও ফেনী। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণভান্ডার থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয় অনেক বছর পর এত প্রবল বৃষ্টি হলো। ৫ থেকে ৮ আগস্ট পযন্ত ভারী বৃষ্টির কারণে এ বন্যার সৃষ্টি হয়।’