প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে গত উপনির্বাচনে প্রকাশ্যে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ ব্যালটে সিল মারা সেই ‘সিল আজাদ’ আবারো নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা করেছে। শুক্রবার ০৫ জানুয়ারী থেকে দিঘলি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর লিপলেট বিতরণ, পোস্টার টাঙ্গানো, মাইকিং, গনসংযোগসহ বিভিন্ন কাজে তার উপস্থিতি দেখা যায় বলে স্থানীয়রা জানান। এতে সুষ্ঠ ভোট নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন প্রার্থীরা।জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের গত উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ব্যালটে সিল মারা চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের দায়ের করা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে জামিনে বের হয় আজাদ। আগামীকাল রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আজাদকে আবারো প্রচার প্রচারণায় দেখে ভোটারদের মধ্যে অনিহা দেখা দিয়েছি।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, আজাদ থাকলে ভোটের অভাব হবে না। সে একাই সব ভোট দিতে পারবে। কষ্ট করে আমরা ভোট কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না।
সে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হলেও ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। তাই দিঘলীতে সুষ্ঠ ভোট আশা করা যাবেনা।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেব বলেন, আজাদ ছাত্রলীগের কেউ না। একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছে। তার সাথে ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীর সম্পর্ক নেই বলে তার দাবী।
সদর আসনের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ রাকিব হোসেন জানান, আজাদের মত ছেলেরা যখন কোন প্রার্থীর হয়ে ভোট করে সেখানে সুষ্ঠ নির্বাচন আশা করা যায় না। গত উপনির্বাচনে সে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ ভোট দিয়ে বহিঃবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে। এবারো সে নৌকার প্রার্থীর হয়ে ভোট করছে। আমি ইতিমধ্যে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা করেছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যক্ষ এম. এ. সাত্তার বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে বলেই নির্বাচনী মাঠে এখনো আছি। আমি আশাবাদী গত উপনির্বাচনের মত সদর আসনে ন্যাক্কারজনক কোন ঘটনা এবার ঘটবে না।
দিঘলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াদুদ লিটন জানান, আজাদ নৌকা প্রতীকের প্রচারণা করছে কিন্তু তাকে কোন দায়দায়িত্ব দেওয়া হয় নাই। ভোটের মাঠে আজাদের প্রচারণায় কোন ধরনের প্রভাব ফেলবে না। সুষ্ঠ ভোট হবে, এতে সঙ্কা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি তাকে।
রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলছেন, নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি উৎসবমুখর পরিবেশ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা নির্বিগ্নে যেন কেন্দ্রে এসে পছন্দ্রের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।