প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) ও লক্ষ্মীপুর-৪ (কমলনগর ও রামগতি) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন লুবনা ও মাহমুদা বেগম তাদের স্বামীদের সঙ্গে (নৌকা ও ঈগল) ভোটে প্রার্থী ছিলেন। তবে তাদের কোনো প্রচার-প্রচারণা ছিল না। তবুও লুবনা জাহান ৩৪৫ ভোট ও মাহমুদা ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন।লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনে লুবনা ও লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে মাহমুদা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে এ দুই নারী প্রার্থীই নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী জামানত হারিয়েছেন।
অপরদিকে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে লুবনার স্বামী নুরউদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে মাহমুদার স্বামী মো. আবদুল্লাহ ঈগল প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে স্বামীর বিজয়ে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা পাচ্ছেন লুবনা। বাসায় আগত নেতাকর্মীদের খাওয়াচ্ছেন মিষ্টিও।
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট কোনো প্রার্থী যদি না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলেন কমিশন।
ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে (রায়পুর-সদর একাংশ) নৌকা মার্কায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ১ লাখ ৩০ হাজার ২১১ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনেই তার স্ত্রী লুবনা পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট। নয়নের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের সেলিনা ইসলাম জামানত হারান। তিনি ৯ হাজার ২৮ ভোট পেয়েছেন। অন্য ১০ প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির আবদুল্লাহ আল মাসুদ ৩২০, ট্রাক প্রতীকের এএফ জসিম উদ্দিন আহমেদ ৯০৩, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির জহির হোসেন ৩৫২ ভোট, জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু ২ হাজার ৩৮৬ ভোট, মশাল প্রতীকের আমির হোসেন ২৩৯ ভোট, ছড়ি প্রতীকের ইমাম উদ্দিন সুমন ৭১, হাতঘড়ি প্রতীকের ফরহাদ মিয়া ৩২৮, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান দাদন গাজী ৮৮, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ মোরশেদ আলম ৫৪৫ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শরীফুল ইসলাম ৬০১ ভোট পেয়েছেন। এরমধ্যে ভোটের একদিন আগে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর ও ছড়ি প্রতীকের সুমন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। লুবনাসহ ১২ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
অপরদিকে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবদুল্লাহ ৪৬ হাজার ৩৭২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে ভোট করে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। আবদুল্লাহর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ ইনু) সহসভাপতি মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮১০ ভোট। আসনটির অন্য ৩ প্রার্থীর মধ্যে ট্রাক প্রতীকের ইস্কান্দার মির্জা শামীম ৭ হাজার ৪৭৪, রকেট প্রতীকের আবদুস সাত্তার পালোয়ান ৬৪৯, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মোহাম্মাদ ছোলায়মান ৩২০ ভোট পেয়েছেন। মাহমুদাসহ এ আসনে ৪ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, বিধি অনুযায়ী প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। যারা কম ভোট পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, জামানত বাজেয়াপ্ত নিয়ে এখনো কাজ শুরু করা হয়নি। তবে যারা পর্যাপ্ত ভোট পাননি, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।